যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত মনুয়া-অজিত, অনুপম হত্যার সাজা  ঘোষণা বিচারকের
অনুপম ও মনুয়া (Photo Credit: Facebook)

কলকাতা, ২৬ জুলাই: বারাসতে অনুপম সিংহ হত্যা মামলায় অপরাধী মনুয়া মজুমদার ও অজিত রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনালেন বিচারক। যাবজ্জীবনের মধ্যে একটি বছর সশ্রম কারাদণ্ড। এছাড়া দুজনকেই ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড। বিচারক বৈষ্ণব সরকার সাজা ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই কান্নায় ভেঙে পড়েন অনুপমের বাব-মা। তাঁরা চেয়েছিলেন ছেলের খুনিদের ফাঁসির সাজা  শোনাল আদালত। গতকালই বারাসতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে অনুপম সিংহ হত্যা মামালায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় মনুয়া ও অজিতকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দুই আসামীকে কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বিচারক। আরও পড়ুন-অনুপম হত্যার দায়ে দোষী মনুয়া অজিত, কালকেই সাজা শোনাবে আদালত

২০১৭-র মে মাসের তিন তারিখ সকালে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন সংস্থায় কর্মরত অনুপম সিংহকে (৩৪) তাঁর বাড়িতেই নৃশংস ভাবে খুন হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তদন্তে নেমে পুলিশের প্রথম মনে হয়েছিল আর্থিক লেন‌দেন সংক্রান্ত গোলমালের জেরে খুন হয়েছেন অনুপম। তবে আর্থিক সচ্ছল অনুপমের খুনের পিছনে টাকা পয়সার কোনও যোগসূত্রই পুলিশ খুঁজে পায়নি। নোটবাতিলের সময় হুন্ডির সঙ্গে অনুপমের সংস্থার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ থাকলেও খুনের কোনও সূত্র সেখানে পায়নি তদন্তকারী দল। পরে তদন্তে পরকীয়ার প্রসঙ্গ আসে। অভিযোগ ওঠে প্রণয়ঘটিত কারণে প্রেমিকের সঙ্গে চক্রান্ত করে স্বামী অনুপম সিংহকে খুন করে মনুয়া। খুনের ১৩ দিনের মাথায় প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা পুলিশ বারাসত থেকে মনুয়া মজুমদার ও তার প্রেমিক অজিত ওরফে বুবাইকে গ্রেপ্তার করে। এই হত্যাকাণ্ডের ৮৬ দিন পরে চার্জশিট জমা দেয় বারাসত থানার পুলিশ। এর মধ্যে ফিংগারপ্রিন্ট ও ফরেনসিক রিপোর্টও ছিল। ৩০২ ও ১২০বি ধারায় খুন ও ষড়যন্ত্রের মামলা চলে। মামলায় ২৭ জন সাক্ষী ছিলেন।

অনুপম খুনের দিন রাতে বাপের বাড়িতে থাকার গল্প সাজিয়েছিল মনুয়া মজুমদার। কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার দিন দুপুরে হৃদয়পুরে অনুপমের বাড়িতে তাঁর অগোচরেই হাজির ছিল মনুয়া ও অজিত। পরে মনুয়া বাপের বড়িতে ফিরে গেলেও অজিত কিন্তু অনুপমের বাড়িতেই আত্মগোপন করেছিল।