কলকাতা, ১৪ অগাস্ট: বিজেপিতে যোগ দিয়েই পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র-মন্ত্রী তথা বেহালা পূর্বের বিধায়ক শোভন চ্যাটার্জিকে। বান্ধবী বৈশাখী ব্যানার্জিকে পাশে নিয়ে শোভন দাবি করলেন 'ভোট লুঠের' প্রতিবাদ করেছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগে তৃণমূল যেভাবে বাধা দিয়েছে তা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন বেহালা পূর্বের বিধায়ক শোভন চট্য়োপাধ্য়ায়। তৃণমূলের কাছে একটা সময় সব কিছু পাওয়া শোভন পাশাপাশি বলেন 'দেশ ও দশের জন্য সাহসী পদক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।'
দলের সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, এবং রাজ্যের শীর্ষ বিজেপি নেতা মুকুল রায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি-তে শোভন চ্যাটার্জি, বৈশাখী ব্যানার্জি-কে স্বাগত জানান। মুকুল রায় দাবি করেন, শোভন চ্যাটার্জির যোগদানে বিজেপি রাজ্য়ে শক্তিশালী হল। আরও পড়ুন-দিল্লিতে শোভন চ্যাটার্জিকে উত্তরীয় পরিয়ে বিজেপি-তে নিলেন মুকুল রায়, মমতার এক সময়ের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ দুই নেতাই এখন মোদি শিবিরে
বেহালা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা পুরভোটে বিজেপি নয়া উদ্যোমে ঝাঁপাবে। দিদির স্নেহধন্য হয়ে মন্ত্রী-কলকাতার মেয়র-দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দলের জেলা সভাপতি হয়েছিলেন শোভন। কিন্তু পারিবারিক -ব্যক্তিগত সমস্যায় দলের ইমেজ খারাপ হওয়ায় শোভনকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। পরে শোভনের ক্ষমতা আরও কেড়ে নেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গিয়েছে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে ফের তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন বেশ কিছু নেতা। তাই বিজেপি নেতারা সতর্ক। তবে শোভন চ্যাটার্জির ব্যাপারটা আলাদা। কারণ মুকুল রায়ের মত তিনিও মমতার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। মুকুল মডেল যেভাবে হিট করেছে, তাতে শোভনকে না নেওয়ার কোনও কারণই খুঁজে পাচ্ছেন না বিজেপি নেতারা।
শোভন চ্যার্টাজির ব্যক্তিগত-পারিবারিক সমস্যাটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না বিজেপি। তার চেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দীর্ঘদিন বড় পদে কাজ করা শোভনকে দলে নিয়ে এই জেলায় আধিপত্য বিস্তার করতে মরিয়া বিজেপি। মিডিয়া রিপোর্টে প্রকাশ, শোভনকে মেয়র পদপ্রার্থী করা হতে পারে। বেহালা থেকে বিধানসভা নির্বাচনেও দাঁড় করানো হতে পারে। বৈশাখীকে দলের মহিলা সংগঠনে কাজে লাগানো হতে পারে।
গতকাল বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শোভন চ্যাটার্জি। তারপর তিনি দিল্লি উড়ে যান বলে খবর। তখন থেকেই জল্পনা শুরু হয় আজ, বুধবারই হয়তো বিজেপিতে যোগ দেবেন শোভন। লোকসভা ভোটের আগে শোভনকে সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি তৃণমূল। তবে এখন তাঁকে ফের দলের হয়ে কাজ করানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শোভন তৃণমূল নেতাদের অনুরোধ না রেখে হয়তো বিজেপিতেই যাচ্ছেন।