নয়া দিল্লি, ১৪ অগাস্ট: একেবারে প্রতীকী একটা ছবি। একটা সময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee) -র দুই হাত আজ মিলে গেল বিজেপি (BJP)-র সদর দফতরে। শোভন চ্যাটার্জিকে উত্তরীয় পরিয়ে বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে নিলেন মুকুল রায় (Mukul Roy)। বিজেপিতে পার্টির সদর দফতরে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার অনুষ্ঠানে শোভনের পাশে থেকে মোদি শিবিরে যোগ দিলেন তাঁর বন্ধু বৈশাখী ব্যানার্জি-ও। তৃণমূল নেতাদের কোনও চেষ্টাই কাজে দিল না, কাননে জোড়া ফুল ঝরে, পদ্ম ফুটল। শোভনের বিজেপিতে যোগদানে রাজ্য রাজনীতিতে যোগ হল নয়া সমীকরণ।
বেহালা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা পুরভোটে বিজেপি নয়া উদ্যোমে ঝাঁপাবে। দিদির স্নেহধন্য হয়ে মন্ত্রী-কলকাতার মেয়র-দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দলের জেলা সভাপতি হয়েছিলেন শোভন। কিন্তু পারিবারিক -ব্যক্তিগত সমস্যায় দলের ইমেজ খারাপ হওয়ায় শোভনকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। পরে শোভনের ক্ষমতা আরও কেড়ে নেওয়া হয়। আরও পড়ুন-যাবজ্জীবন নয়, ছত্রধর মাহাতোর সাজা কমে ১০ বছরের কারাবাস
Delhi: TMC MLA Sovan Chatterjee joins Bharatiya Janata Party in presence of BJP leader Mukul Roy, at party headquarters. pic.twitter.com/LAoG2lLyif
— ANI (@ANI) August 14, 2019
বেহালা পূর্বের বিধায়ক-কাউন্সিলের শোভনের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিলেন তাঁর বন্ধু বৈশাখী ব্যানার্জিও। রাজ্য বিজেপি-র শীর্ষ নেতা দিলীপ ঘোষ জানালেন, "শোভন চ্যাটার্জি- বৈশাখী মুখার্জি বিজেপিতে যোগদানের করার প্রসঙ্গে আমিও শুনেছি। শোভনবাবুর বেশ অভিজ্ঞ নেতা এলে, ওর মত নেতা আমাদের দলের এসে কাছ করলে তা বিজেপি-র লাভ হবে। যদি ওরা আমাদের দলে যোগ দেন তাহলে স্বাগত।"
পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, তৃণমূলের অনেক নেতা বিজেপিতে যোগ দিতে চাইলেও, পুলিস কেসের ভয় দেখিয়ে রাজ্যের শাসক দল তাদের আটকে দিচ্ছে। তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে আসার ব্যাপারে আগের চেয়ে অনেক সর্তক পদ্মশিবিরের রাজ্য নেতারা। মনীরুল ইসলামের কাণ্ডে মুকুল রায়ও বুঝে গিয়েছেন, সবাই আসতে চাইলেই তাকে স্বাগত জানানো যাবে না। সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গিয়েছে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে ফের তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন বেশ কিছু নেতা। তাই বিজেপি নেতারা সতর্ক। তবে শোভন চ্যাটার্জির ব্যাপারটা আলাদা। কারণ মুকুল রায়ের মত তিনিও মমতার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। মুকুল মডেল যেভাবে হিট করেছে, তাতে শোভনকে না নেওয়ার কোনও কারণই খুঁজে পাচ্ছেন না বিজেপি নেতারা।
শোভন চ্যার্টাজির ব্যক্তিগত-পারিবারিক সমস্যাটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না বিজেপি। তার চেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দীর্ঘদিন বড় পদে কাজ করা শোভনকে দলে নিয়ে এই জেলায় আধিপত্য বিস্তার করতে মরিয়া বিজেপি। মিডিয়া রিপোর্টে প্রকাশ, শোভনকে মেয়র পদপ্রার্থী করা হতে পারে। বেহালা থেকে বিধানসভা নির্বাচনেও দাঁড় করানো হতে পারে। বৈশাখীকে দলের মহিলা সংগঠনে কাজে লাগানো হতে পারে।
গতকাল বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শোভন চ্যাটার্জি। তারপর তিনি দিল্লি উড়ে যান বলে খবর। তখন থেকেই জল্পনা শুরু হয় আজ, বুধবারই হয়তো বিজেপিতে যোগ দেবেন শোভন। লোকসভা ভোটের আগে শোভনকে সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি তৃণমূল। তবে এখন তাঁকে ফের দলের হয়ে কাজ করানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শোভন তৃণমূল নেতাদের অনুরোধ না রেখে হয়তো বিজেপিতেই যাচ্ছেন।