কলকাতা,১৭ মে: দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারির পর থেকেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) কর্মী-সমর্থকরা। গ্রেফতারের খবর পেয়েই শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু তৃণমূল সমর্থক পতাকা হাতে এসে জড়ো হন। নিজাম প্যালেসে রাজ্যে লকডাউনের মাঝে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভ নিয়ে চিন্তায় তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৬ সালে হওয়া নারদা স্টিং কেলেঙ্কারি কাণ্ডে আজ রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), সুব্রত মুখার্জি (Subrata Mukherjee), বিধায়ক-প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র (Madan Mitra) এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র-মন্ত্রী শোভন চ্যাটার্জি ( Sovan Chatterjee)-কে বিনা নোটিসে তুলে এনে গ্রেফতারির পর থেকেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সিবিআইয়ের নিজাম প্যালেসের বাইরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। আরও পড়ুন: Narada Case: নারদা মামলায় গ্রেফতার ৪ তৃণমূল নেতাদের ভার্চুয়াল শুনানিতে হবে বিচার
রাজ্যের শাসক দলের কর্মী সমর্থকরা স্লোগান দিতে থাকেন। গেট লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করেন শাসক কর্মী-সমর্থকরা। গেটের সামনের রাস্তায় দেওয়া গার্ড রেলে তাঁরা উল্টে দেন। পরিস্থতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যায়।
#WATCH | TMC protesters pelted stones on security forces in West Bengal outside the CBI office. pic.twitter.com/GxGUZmIQxe
— ANI (@ANI) May 17, 2021
এরপরই তৃণণূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhisheek Banerjee) টুইটে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিলেন। টুইটে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ লিখলেন, " আমি প্রত্যেকে বলব আইনের ওপর আস্থা রাখার। লকডাউন সংক্রান্ত কোনও বিধিনিষেধ যাতে না ভাঙা হয় তার আবেদন জানাচ্ছি। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের চূড়ান্ত বিশ্বাস রয়েছে। আইনি পথেই আমরা লড়াই চালাব।"
I urge everyone to abide by the law & refrain from any activity that violates lockdown norms for the sake of the larger interest of Bengal and its people.
We have utmost faith in the judiciary & the battle will be fought legally.
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) May 17, 2021
নিজাম প্যালেসের ১৫ তলায় তৃণমূলের চার নেতা তথা রাজ্যের দুই মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে পৃথক ঘরে রাখা হয়েছে। সিবিআই হানার খবর পেয়ে সকালেই ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তারপরে সেখান থেকে সটান চলে যান নিজাম প্যালেসে। ১৫ তলার ভিজিটরস রুমে বসে আছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, তিনি বলেছেন, বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজ্যের চার তৃণমূল নেতাকে। যতক্ষণ না তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় ততক্ষণ তিনি নিজাম প্যালেস ছেড়ে যাবেন না। এক ঘণ্টা কেটে গেলেও সেখান থেকে বেরোননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সকালে যখন চেতলার বাড়ি থেকে সিবিআই ফিরহাদ হাকিমকে গ্রেপ্তার করে তখন তিনি বলেছিলেন, “আমাকে নারদা মামলায় গ্রেপ্তার করল সিবিআই। আদালতে লড়ে নেব।”
একে একে মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তারির পর শোভন পত্নী রত্না, তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছা যান নিজাম প্যালেসে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে হাজির হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সকাল দশটা নাগাদ নিজাম প্যালেসের অ্যারেস্ট মেমোয় চারজনকে দিয়ে সইও করিয়ে নেওয়া হয়েছে। সোমবার সাত সকালে মাত্র ঘণ্টা দেড়েকের ব্যবধানে শাসকদলের চার নেতাকে এভাবে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তারির ঘটনায় রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।