কলকাতা, ১৩ অগাস্ট: প্রাণ হারালেন করোনা-যোদ্ধা, শ্যামনগরের সকলের প্রিয় চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্য। দক্ষিণ কলকাতার বাইপাসের ধারের মেডিকা হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর, সেখানেই করোনা-যুদ্ধে হার মানলেন প্রদীপবাবু। এলাকার জনপ্রিয় ডাক্তারবাবুকে হারিয়ে যখন চোখের জলে ভাসছে শ্যামনগর, ঠিক তখনই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল ধরাল প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা! যা দেখে হতবাক এলাকাবাসীরা। কীভাবে এত বিল? সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দেন সকলে! বিক্ষোভে নড়েচড়ে বসল রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন।
বিল রিভিউ করে কমানো যায় কিনা, সেটি পরখ করে দেখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীম কুমার ব্যানার্জি। এদিকে করোনা-পরিস্থিতিতে একাধিক চিকিৎসক নিজের দরজা বন্ধ রেখেছিলেন, কিন্তু ব্যতিক্রমী ছিলেন প্রদীপবাবু, হাসপাতালের চেম্বার বন্ধ থাকলেও নিজের উদ্যোগে চেম্বার খুলে সেখানে চিকিৎসা করতেন। দরিদ্র মানুষের থেকে নিতেন না পারিশ্রমিক উল্টে নিজের টাকা খরচ করে কিনে দিতেন ওষুধ। উত্তর ২৪ পরগনায় ব্যারাকপুর থেকে নৈহাটি পর্যন্ত ‘প্রদীপ ডাক্তার’ ভগবান হিসেবে পরিচিত ছিলেন আমজনতার কাছে। তাঁর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরে মুষড়ে পড়ে এলাকাবাসী। চিকিৎসার খরচ টানতে এলাকাবাসীরাই চাঁদা তুলতে বেরোন। এরপরই আসে দু:সবাদ। মেডিকা হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই চিকিৎসকের।
তবে, পরিস্থিতি জটিল হয় যখন চিকিৎসকের বিল আসে প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা। কীভাবে এতটাকা বিল এল সেই নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের দরবারে প্রশ্ন তুলতেই বিল রিভিউয়ের নির্দেশ দেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। “চিকিৎসকের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। সোশ্যাল মিডিয়াতে ১৮ লক্ষের বেশি বিলের ঘটনাটি নজরে আসে। এই বিল রিভিউ করে দেখা হোক। যদি রোগীর পরিবার ওই হাসপাতালের বিল মিটিয়েও দিয়ে থাকেন, তবু যদি তাদেরকে কিছু টাকা ফিরিয়ে দেওয়া যায় সে চেষ্টাই কাম্য।” বিষয়টি নজরে আসতেই মন্তব্য করেন অসীম কুমার ব্যানার্জি।