নতুন দিল্লি, ১৮ অক্টোবর: নেটফ্লিক্স (Netflix) এবং অ্যামাজ়ন প্রাইম ভিডিও-র (Amazon Prime Video) মতো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলিকে (streaming platforms) সেন্সরশিপের আওতায় আনার বিষয়ে বিবেচনা করছে সরকার। সরকারি সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে। যার জেরে নেটফ্লিক্স এবং অ্যামাজ়ন প্রাইম ভিডিও-য় চালু থাকা অরিজিনাল কন্টেন্ট প্রচারের আগে তার উপর কেন্দ্রীয় নজরদারি শুরু হতে পারে বলে সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের এক শীর্ষ আধিকারিক। বর্তমানে দেশে সিনেমা এবং টেলিভিশনে প্রচারিত অনুষ্ঠানকে আগে সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র নিতে হয়। তবে এতদিন অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলির কনটেন্ট সেই আওতায় ছিল না।
অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের কিছু বিষয়বস্তু অশ্লীল বা ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করছে। সম্প্রতি কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি আদালতে এবং পুলিশে এই অভিযোগ দায়ের হয়। যদিও সম্ভাব্য সেন্সরশিপ চাপতে পারে এই আঁচ করে নেটফ্লিক্স এবং হটস্টার ( Hotstar) জানুয়ারিতে একটি স্ব-নিয়ন্ত্রণ কোড স্বাক্ষর করে। তবে অ্যামাজ়ন তাতে যোদ দেয়নি। তারা বলেছে যে বর্তমান আইনগুলিই এই বিষয়ে পর্যাপ্ত। আরও পড়ুন: 5G-র হাত ধরে এবার আরও ডিজিটাল হওয়ার পথে ভারত; একটা সিনেমা ডাউনলোড করতে সময় লাগবে মাত্র ৬ সেকেন্ড!
ওই সরকারি আধিকারিক বলেন, "স্ব-নিয়ন্ত্রণ সকলের জন্য এক নয়, আর এটা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই বিষয়ে আমাদের নির্দেশ পরিষ্কার। কীভাবে সমস্যাগুলি সমাধান করতে হবে তা আমাদের দেখতে হবে।" গত বছর নেটফ্লিক্সের প্রথম ইন্ডিয়ান অরিজিনাল সিরিজ ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর বিরুদ্ধে ‘আপত্তিজনক দৃশ্য’ দেখানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় কোর্ট। এরপরে গত মাসেও নেটফ্লিক্সের বিরুদ্ধে একটি নালিশ মুম্বই পুলিশের কাছে দায়ের করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, নেটফ্লিক্সে প্রচারিত একাধিক অনুষ্ঠানে হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করা হচ্ছে। বিষয়টি বিচারাধীন বলে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি মুম্বই পুলিশ। এই কারণে সরকারের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং এই জাতীয় কনটেন্ট সরবরাহকারীদের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নিয়ন্ত্রণমূলক কাঠামো নিয়ে আসার প্রয়াসের বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।
যদিও জানা যাচ্ছে, যে কোনও বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা সরকারের রয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি বিকল্প পথের বাছার কাজও করা হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়াই একটি স্ব-নিয়ন্ত্রণ কোড, একটি সরকার-পর্যবেক্ষণকৃত কোড বা কনটেন্ট প্রকাশের আগে অনুমোদন।
ওই সরকারি আধিকারিক বলেন, ভারতে আমাজ়ন এবং নেটফ্লিক্সে বলিউডের মুভিগুলিতে তামাকবিরোধী প্রচার করা হয় না। তাছাড়া কিছু কনটেন্ট বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। নেটফ্লিক্স এবং অ্যামাজন ভারতে দর্শকদের জয় করতে আরও বেশি বেশি মূল লেকাল কনটেন্ট তৈরি করছে। মোবাইল ডেটা এবং স্মার্টফোনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার কারণেই তারা এই পদক্ষেপ নিচ্ছে। নেটফ্লিক্স গত বছর জানিয়েছিল যে ভারতে তাদের গ্রাহক সংখ্যা ১০০ মিলিয়ন হতে পারে। সম্প্রতি তারা মাসিক সাবক্রিপশন চার্জ মাত্র ১৯৯ টাকা করেছে।