Credits: GoFundMe and Guinness World Record

পোলিও একটি বিপজ্জনক ভাইরাস, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত পোলিওর ঘটনা উঠে আসছে। এই ভাইরাস আক্রান্তদের শরীরে এতটাই ক্ষতি করে যে জীবন নরকের মতো হয়ে যায়। একজন আমেরিকান বাসিন্দা পল আলেকজান্ডার ৭০ বছর ধরে পোলিওর সঙ্গে বেঁচে আছেন। অবশেষে তিনি তার কষ্টের জীবন থেকে মুক্তি পেলেন। পল আলেকজান্ডার পোলিও পল নামে পরিচিত। তিনি বছরের পর বছর একটি যন্ত্রের সাহায্যে জীবিত ছিলেন, যাকে বলা হয় আয়রন ফুসফুস। সহজ ভাষায় বললে তার বুকে আসল ফুসফুস ছিল না, লোহার ফুসফুসের সাহায্যে তিনি বেঁচে ছিলেন। এককথায় লোহার ফুসফুসে বন্দী ছিলেন তিনি।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, ১৯৫২ সালে আমেরিকায় দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে পোলিও ভাইরাস। সেই সময় এই ভাইরাসের কারণে ভুগছিল হাজার হাজার শিশু। তখন টেক্সাসের ডালাসের পল আলেকজান্ডারের বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর। হঠাৎ একদিন প্রচন্ড জ্বর, শরীর ও ঘাড়ে ব্যাথা শুরু হয় তার। পলের মা বুঝতে পারেন যে পলও পোলিওতে আক্রান্ত হয়েছেন। অসুস্থতার কারণে এমন একটা সময় আসে যখন পল ঠিক করে নিঃশ্বাস নিতে পর্যন্ত পারছিলেন না। এরপর দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডাক্তার প্রথমে বলেছিলেন যে তিনি আর বাঁচাবেন না, কিন্তু পরে অন্য এক ডাক্তার ট্র্যাকিওটমি সার্জারি করে বাতাসের পাইপে একটি ছিদ্র করেন, যার মাধ্যমে পল শ্বাস নিতে সক্ষম হয়। এই অস্ত্রোপচারের পরই একটি বড় লোহার ক্যাপসুলে রাখা হয়, যেখানে বাকি জীবন কাটান তিনি। ১৯৫২ সালে এই ক্যাপসুলটিকে বলা হয় আয়রন ফুসফুস। ফুসফুস সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেলে এই ক্যাপসুলের মধ্যে রাখা হয়।

ধীরে ধীরে কিছু সময়ের জন্য এই ক্যাপসুলের বাইরে থাকতেও শিখেছিলেন তিনি, কিন্তু রাতে ঘুমানোর জন্য ফের এই ক্যাপসুলের প্রয়োজন হত তার। এই ক্যাপসুলের ওপর ভর করেই পড়াশোনা শেষ করে আইনজীবী হন পল আলেকজান্ডার। ১২ মার্চ তার GoFundMe পেজের মাধ্যমে জানানো হয় যে ১১ মার্চ মারা গেছেন তিনি। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, সবচেয়ে দীর্ঘ আয়ুর ব্যক্তি ছিলেন পল।