স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন মহান ভারতীয় সাধক, সমাজ সংস্কারক এবং আধ্যাত্মিক গুরু। প্রত্যেক ভারতীয়, বিশেষ করে প্রত্যেক যুবকের স্বামী বিবেকানন্দের সম্পর্কে জানা উচিত। তাঁর আসল নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত। ১৮৬৩ সালের ১২ জানুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন বিবেকানন্দ। তাঁর বাবা বিশ্বনাথ দত্ত পেশায় ছিলেন একজন বিখ্যাত আইনজীবী এবং তাঁর মা ভুবনেশ্বরী দেবী ছিলেন একজন ধার্মিক মহিলা। ৪ জুলাই পালন করা হয় স্বামী বিবেকানন্দের মৃত্যুবার্ষিকী।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী নরেন্দ্র নাথ দত্ত তথা স্বামী বিবেকানন্দ। এরপর প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে শিক্ষা শেষ করেন তিনি। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। পড়াশোনার পাশাপাশি সঙ্গীত, খেলাধুলা এবং অন্যান্য শিল্পের প্রতিও আগ্রহী ছিলেন তিনি। নরেন্দ্রনাথের আধ্যাত্মিক অনুসন্ধান তাকে নিয়ে গিয়েছিল রামকৃষ্ণ পরমহংসের কাছে। ১৮৮১ সালে রামকৃষ্ণ পরমহংসের সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হওয়ার পর স্বামী বিবেকানন্দকে শিষ্য হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংস। ১৮৮৬ সালে রামকৃষ্ণ পরমহংসের মৃত্যুর পর সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করেন নরেন্দ্রনাথ। এরপর সন্ন্যাসী নরেন্দ্রনাথ তাঁর নাম পরিবর্তন করে রাখেন স্বামী বিবেকানন্দ।
১৮৯৩ সালে শিকাগোতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ধর্ম কংগ্রেসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ভাষণের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলিতে ভারতীয় সংস্কৃতি এবং বেদান্ত দর্শনের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন তিনি। "আমেরিকা ভাই ও বোনদের" বলে তিনি বক্তৃতা শুরু করায় তার ভাষণ সকলের মন জয় করেছিল। ১৮৯৭ সালে সমাজকে সেবা করার লক্ষ্যে গুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসকে নিবেদিত করে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। এই মিশন অনেক হাসপাতাল, স্কুল এবং সমাজসেবামূলক কাজ শুরু করে। এছাড়াও তিনি বারাঙ্গর মঠ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে রামকৃষ্ণ মিশনের সদর দফতরে পরিণত হয়। এই মঠের উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয়, সামাজিক ও শিক্ষামূলক কাজে সহায়তা করা। ১৯০২ সালের ৪ জুলাই বেলুড় মঠে মৃত্যু হয় স্বামী বিবেকানন্দের। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৯ বছর।