রাখিবন্ধন উৎসব ভারতের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। চিরদিন রক্ষা করার অঙ্গীকারই রাখিবন্ধনের মূল কথা । রাখি পূর্ণিমার এই বিশেষ দিনটিতে বোনেরা তাদের ভাই বা দাদার হাতে ‘রাখি” নামক একটি পবিত্র সুতো বেঁধে দিয়ে সারাজীবন তাকে রক্ষা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয় । হিন্দু, জৈন ও শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই উৎসব পালন করে থাকে।
মহাভারতে কথিত আছে একদা একটি যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণের কবজিতে আঘাত লেগে রক্তপাত শুরু হলে পাণ্ডবদের স্ত্রী দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির আঁচলের কিছু অংশ ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতের ক্ষতস্থানে বেঁধে দেন এবং প্রতিদানে অভিভূত কৃষ্ণ দ্রৌপদীকে নিজের বোন বলে ঘোষণা করেন ও প্রয়োজনে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন । পরবর্তীকালে দুঃশাসনের দ্বারা দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময় কৃষ্ণ তাঁর অলৌকিক শক্তি প্রয়োগে দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করে সেই প্রতিশ্রুতির প্রতিদান দেন। এইভাবেই রাখিবন্ধনের প্রচলন হয়েছে বলেও মনে করা হয়।
আবার১৯০৫ খ্রীস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখিবন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন । কলকাতা, ঢাকা ও সিলেট থেকে হাজার হাজার হিন্দু ও মুসলিম ভাই ও বোন কে ডাক দিয়েছিলেন ও একতার প্রতীক হিসাবে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন। রাখী বন্ধন উৎসবের মাধ্যমে তিনি হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগিয়ে তুলেছিলেন।
পৌরাণিক এবং ঐতিহাসিক বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে রাখিবন্ধন উৎসব উদযাপিত হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ভাইবোনের মধ্যকার স্বর্গীয় সম্পর্কের উদযাপন করার একটি পবিত্র উৎসব । রাখি পরবার এবং পরাবার সাথে সাথে ভাইবোনদের মধ্যে বিভিন্ন সৌহার্দ্যমূলক বার্তা আদান প্রদানে এই উৎসবটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক এই কামনা করে সকলের জন্য রইল ছবি সহ বার্তা।