মহাশিবরাত্রি হল একটি আধ্যাত্মিক উৎসব, এই দিনটিকে উৎসর্গ করা হয় ভগবান শিব ও মা পার্বতীর নামে। শিবপুরাণ অনুসারে, এই দিনে মা পার্বতীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল শিবের। মহাশিবরাত্রির (Maha Shivaratri) দিনে মা পার্বতী ও ভগবান শিবের পুজো করলে সুখ, শান্তি ও সৌভাগ্য লাভ করা যায়। এমনও মান্যতা আছে যে অবিবাহিত মেয়েরা এই দিনে শিব-পার্বতীর পুজো করলে তারা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী বর পায়।

ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে পালিত হয় মহাশিবরাত্রি উৎসব। ২০২৪ সালের ফাল্গুন কৃষ্ণপক্ষ চতুর্দশী শুরু হচ্ছে ০৮ মার্চ রাত ০৯:৫৭ মিনিটে এবং শেষ হবে ০৯ মার্চ সন্ধ্যা ০৬:১৭ মিনিটে। যেহেতু মহাশিবরাত্রি পুজো প্রদোষকালে বা সন্ধ্যা থেকে হয়, তাই এই বছর মহাশিবরাত্রি পালিত হবে ৯ মার্চ।

সনাতন ধর্মে বিশ্বাসীরা সাধারণত মহাশিবরাত্রির উপবাস করে থাকেন। এই দিনে শিবরাত্রি উপবাস পালনকারী ব্যক্তিকে ব্রাহ্ম মুহুর্তে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে ধ্যান করার পাশাপাশি সূর্য প্রণাম করতে হয়। এরপর ভগবান শিব এবং মাতা পার্বতীর ধ্যান করে সারাদিন উপবাস ও উপাসনার প্রতিশ্রুতি নিতে হয়। পুজোর সময় অনুসারে, প্রথমে শিব মন্দিরে গিয়ে নিবেদন করতে হবে শিবলিঙ্গে দুধ, গঙ্গাজল, বেল পাতা, দুধের মিষ্টি, ধতুরা এবং ফল। এরপর, বাড়ির মন্দিরে ভগবান শিব ও মাতা পার্বতীর একটি ছবি বা মূর্তি স্থাপন করে তাঁদের উপর গঙ্গা জল অর্পণ করতে হবে। সঙ্গে ধূপ প্রদীপ জ্বালিয়ে শিব মন্ত্র জপ করতে হবে।

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও মহাশিবরাত্রির রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাস করা হয় যে এই রাতে গ্রহরা উত্তর গোলার্ধে এমনভাবে অবস্থান করে যে মানুষের মধ্যে শক্তি স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। অর্থাৎ প্রকৃতি স্বয়ং মানুষকে তার আধ্যাত্মিক শিখরে পৌঁছাতে সাহায্য করে। আধ্যাত্মিক বিশ্বাস অনুসারে, মহাশিবরাত্রির রাতে শিব ও মা পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল। অর্থাৎ এই সেই দিন যেদিন শিব বৈরাগীর জীবন থেকে গৃহস্থালির জীবনে পা রেখে ছিলেন। মান্যতা আছে এই রাত জেগে শিব ও মা পার্বতীর পুজো করলে তাঁদের বিশেষ আশীর্বাদ পাওয়া যায়। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, ভগবান শিবকে প্রকৃতি পুরুষও বলা হয়। তাই মান্যতা আছে মহাশিবরাত্রিতে মানুষকে ঈশ্বরের সঙ্গে সংযুক্ত করে এই প্রকৃতি।