পূর্ণিমাকে মনে করা হয় দেব তিথি। শাস্ত্রমতে, পূর্ণিমার দিনের উপবাসকে শ্রেষ্ঠ উপবাসের মধ্যে একটি বলে মান্যতা রয়েছে। এছাড়াও মান্যতা রয়েছে, মাঘ পূর্ণিমার (Magh Purnima) দিন গঙ্গায় স্নান করলে মোক্ষ পাওয়া যায়, কারণ এই দিনে দেবতারা গঙ্গা স্নান করতে আসেন পৃথিবীতে। ২০২৪ সালে মাঘ পূর্ণিমা পড়েছে ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ। মাঘ পূর্ণিমার উপবাস করলে অবশ্যই শুনতে হবে এদিনের ব্রতকথা। মান্যতা রয়েছে, ব্রতকথা না শুনলে বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর পুজো অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে মাঘ পূর্ণিমা ব্রত কথায় বলা হয়, ধনেশ্বর নামের এক ব্রাহ্মণ ও তাঁর স্ত্রী কান্তিকা নগরে বাস করতেন। ভিক্ষা করেই জীবনযাপন করতেন তাঁরা। ব্রাহ্মণ ও তাঁর স্ত্রীর কোনও সন্তান ছিল না। একদিন ব্রাহ্মণের স্ত্রী নগরে ভিক্ষা চাইতে গেলে, নগরবাসীরা তাঁকে বন্ধ্যা বলে বিদ্রুপ করে ভিক্ষা দিতে অস্বীকার করে। এদিনের ঘটনার পর, ব্রাহ্মণের দুঃখি স্ত্রী ১৬ দিন ধরে দেবী কালীর পুজো করেন। স্বামী-স্ত্রী দুজন মিলে নিয়ম মেনে এই পুজো করেছিলেন। মা কালী তাঁদের ভক্তিতে খুব খুশি হয়ে তাঁদের সামনে এসে ব্রাহ্মণের স্ত্রীকে গর্ভবতী হওয়ার আশীর্বাদ দিয়ে যান। পাশাপাশি তিনি বলেন, প্রতি পূর্ণিমায় একটি করে প্রদীপ জ্বালাতে এবং প্রতিবার পূর্ণিমায় একটি করে প্রদীপ বাড়িয়ে দিতে। পূর্ণিমা উপবাস পালন করে এইভাবে কমপক্ষে ৩২টি প্রদীপ জ্বালানোর কথা বলে যান তিনি।
মা কালীর নির্দেশ অনুসারে ব্রাহ্মণ দম্পতি পূর্ণিমার দিন উপবাস করে প্রদীপ জ্বালানো শুরু করেন। মা কালীর আশীর্বাদে ব্রাহ্মণের স্ত্রী গর্ভবতী হন এবং জন্ম দেন এক পুত্র সন্তানের, যার নাম ছিল দেবদাস। তবে দেবদাসের ছিল স্বল্পায়ু। দেবদাস বড় হলে শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে তাকে তার মামার কাছে কাশিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে কাশিতে এক দুর্ঘটনায় প্রতারণার কারণে বিয়ে হয়ে যায় তার। কিছুদিন পর কাল তার প্রাণ নিতে আসে, কিন্তু সেদিন ছিল পূর্ণিমা এবং ব্রাহ্মণ দম্পতি তাদের পুত্রের জন্য সেদিন উপবাস করেছিলেন। পূর্ণিমার উপবাসের কারণে কাল দেবদাসের কোনও ক্ষতি করতে পারেনা। এরপর থেকে পূর্ণিমার উপবাসের মান্যতা বাড়তে থাকে। এই উপবাস সমস্ত দুঃখের নাশ করে। সন্তানের দাম্পত্য জীবনে সুখ আসে। ঘরের সম্পদ বৃদ্ধি হয়।