ত্রিপুরায় শুরু হল ঐতিহ্যবাহী খার্চি পুজো। উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ত্রিপুরী সম্প্রদায়ের উৎসব হল খার্চি পুজো। বিশেষ রীতি মেনে শিব, দুর্গা, হরি, লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশ, ব্রহ্মা, বাগদেবী, গঙ্গা, পৃথিবী, সমুদ্র, অগ্নি, কামদেব এবং হিমাদ্রি - খার্চি পুজোয় একসাথে পূজিত হন এই ১৪ জন দেবদেবী। রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত ১৪ দেবতার মন্দিরে পুরো সপ্তাহ ধরে নিয়ম মেনে পুজো করা হয়। আষাঢ় মাসের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে পালন করা হয় সাত দিনের এই উৎসব। এই উৎসবের তিথি পড়ে জুন থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে।
খার্চি পুজো পরিচিত খার্চি চতুর্দশ দেবতা পুজো নামেও। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে মহারাজা কৃষ্ণ কিশোর মানিক্যের হাত ধরে শুরু হয় চতুর্দশ দেবতার পুজো। এটি ত্রিপুরার রাজাদের কুল দেবতার পুজো ও মেলা হলেও ১৯৪৮ সালের ১৫ অক্টোবরের পর মেলার সমস্ত দায়িত্ব নেয় রাজ্য সরকার। সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গেই প্রতিবছর পালন করা হয় এই পুজো ও মেলা। এই উৎসব উপলক্ষে দেওয়া হয় একদিনের সরকারি ছুটি। ২০২৪ সালে, খার্চি পুজো পালন করা হবে ১৪ জুলাই, রবিবার।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, মাতা বা দেবীর ঋতুস্রাবের সময়কালকে বলা হয় অম্বু বাচী। মাতৃদেবীর ঋতুস্রাবের সময় পৃথিবীকে অপবিত্র বলে মনে করা হয় বলে এই দিনগুলিতে চাষ করা হয় না। ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার পর পৃথিবী পরিষ্কার করার জন্য পালন করা হয় খার্চি পুজো উৎসব। খার্চি পুজোর সঙ্গে যুক্ত আচারগুলি পালন করা হয় ৭ দিন ধরে। পুজোর দিন আগরতলার মন্দির চত্বর থেকে ১৪টি দেবতার মূর্তি নিয়ে পবিত্র সাইদ্রা নদীতে ডুব দেওয়ার পর সেগুলো মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আনুষ্ঠানিক স্নানের পরে প্রতিমাগুলি সাজিয়ে তোলা হয় এবং ৭ দিনের মেলার সঙ্গে ধুমধাম করে পালন করা হয় খার্চি পুজো উৎসব।