Theme Puja behala 11 Pally Photo Credit: Facebook

বেহালা ১১ পল্লী শারদোৎসব সমিতি

শিল্পী রত্নদীপ প্রামাণিক যখনই উত্তরে তার বাড়ি থেকে দক্ষিণ কলকাতায় আসতেন,দেখতেন একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হল গুলো। খারাপ লাগতো , কিন্তু আরও খারাপ লাগতো যখন দেখতেন যে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম থিয়েটারকেও গ্রাস করছে বিগ বাজেটের সিনেমা, মাল্টিপ্লেক্সের রমরমা। থিয়েটারের করুণ অবস্থা মানে এই থিয়েটারের নেপথ্য শিল্পীদেরও অবস্থাও সেরকম। এমনই সময় বেহালা ১১ পল্লীর পুজোর প্রস্তাব আসে শিল্পীর কাছে। তখনই পুরো থিয়েটার টেকনিশিয়ানদের নিয়ে একটা গোটা পুজো পরিকল্পনা কথা তিনি ভেবে ফেলেন।

অসুস্থ শরীর নিয়েও নিরলস প্রয়াসে নাটকের মঞ্চ প্রস্তুত করেন যারা। যারা সাজিয়ে তোলেন অভিনেতা, অভিনেত্রীদের। যাদের হাতের আলোয় রঙিন হয়ে ওঠে সাদা কালো ক্যানভাস। এত হাড়ভাঙা খাটনি সত্ত্বেও যারা থেকে যান নেপথ্যে। সেই নেপথ্যের শিল্পীরা কেমন আছেন , কেমন আছে তাঁদের পরিবার? থিয়েটার দেখতে বসে অলীক জগতে হারিয়ে যাওয়ার সময় আর সেসব কথা মনে পড়ে না আমাদের। সেসব খবর নেওয়ারও চেষ্টা করি না আমরা। থিয়েটারের সেই টেকনিশিয়ান, মেক আপ আর্টিস্ট, লাইটম্যানদের সম্মান জানিয়েই ৭০ তম বর্ষে সেজে উঠছে বেহালার ১১ পল্লির মণ্ডপ।থিমের নাম 'নেপথ্যে'।

থিম ভাবনা ও সৃজনে রয়েছেন শিল্পী রত্নদীপ প্রামাণিক। প্রতিমা তৈরি করেছেন নবকুমার পাল। পুজো মণ্ডপের অন্দরে যা ভাষ্য চলবে তা পাঠ করেছেন অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদার এবং আবহ শিল্পী গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।

ক্লাবের সম্পাদক প্রতীপ ঘোষ জানালেন, ‘‘এই বছরে ৭০ তম বর্ষ উপলক্ষ্যে আমাদের থিম হল ‘নেপথ্যে’। যেহেতু এই বছর বাংলা থিয়েটারের ১৫০ বছর উদযাপন করা হচ্ছে, তাই সেই কথা মাথায় রেখে আমরা তুলে ধরার প্রয়াস করেছি থিয়েটার বা মঞ্চাভিনয়ের নেপথ্যে যে কর্মীরা থাকেন, তাঁদের দিনযাপনকে। আবহ তৈরি করা হয়েছে সেই মতোই, যে খানে দেখা যাবে থিয়েটারের মঞ্চের পিছনে নেপথ্যশিল্পীদের কাজকর্ম”।

মণ্ডপজুড়ে থিয়েটার চত্বরের পরিবেশ। টিকিট কাউন্টার থেকে চায়ের দোকান, পোস্টার, দেওয়াল লিখন, সবকিছুর মাধ্যমেই থিয়েটারের নেপথ্য কর্মীদের ছোয়া। দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে উঠেও যদি এই মণ্ডপ সেই সব নেপথ্য শিল্পীদের যন্ত্রণা ও দুর্দশার কথা সাধারণ মানুষকে মনে করিয়ে দিতে সফল হয়, সেটাই হবে সবচেয়ে বড় পুরস্কার, বলছেন থিম শিল্পী।

কী ভাবে যাবেন?

বাসে করে তারাতলা হতে ১৪নং বাসট্যান্ড অথবা ট্রাম ডিপো স্টপেজে নেমে জেমস লং সরণীর দিকে ৫-১০ মিনিট হেঁটে পৌঁছে যেতে পারেন সত্যেন রয় রোডের বেহালা ১১ পল্লী-র পুজা মন্ডপে।