“Once a cop, always a cop” ইংরেজির এই লাইনটি খুবই প্রচলিত, অনেক ধরনের পেশার ক্ষেত্রে এই লাইনটি প্রযোজ্য। দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালাম ছিলেন একজন শিক্ষক এবং বিজ্ঞানী। রাষ্ট্রপতি পদে পৌঁছানোর পরেও সরল ও সহজ আচরণ ত্যাগ করেননি তিনি, শিক্ষক থাকাকালীন যেমন আচরণ ছিল সারাজীবন সেই আচরণই রয়ে গিয়েছিল তাঁর। ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই আইআইএম শিলং-এ বক্তৃতা দেওয়ার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এপিজে আব্দুল কালামের। ৪৩ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পরেও অবসর নেননি তিনি। তবে হৃদরোগে আক্রান্ত না থাকা সত্ত্বেও আচমকা হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর।
১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর ভারতের তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে জন্ম হয় এপিজে আব্দুল কালামের। ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। আব্দুল কালামের শৈশব জীবন কেটেছে দারিদ্র্য জেলে পরিবারে। লেখাপড়ার প্রতি গভীর আগ্রহ থাকার কারণে একজন প্রতিশ্রুতিশীল এবং পরিশ্রমী পড়ুয়া ছিলেন তিনি। পদার্থবিদ্যা এবং গণিত ছিল আব্দুল কালামের প্রিয় বিষয়। ত্রিচিরাপল্লীর সেন্ট স্টিফেন কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন আব্দুল কালাম। নিষ্ঠা ও প্রতিভা দিয়ে শিক্ষকদের মুগ্ধ করেছিলেন তিনি। কিন্তু কম নম্বর পেয়ে ৮টি পদের মধ্যে নবম স্থান পাওয়ার জন্য ফাইটার পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করা থেকে বঞ্চিত হন তিনি।
কালাম এখানেই থেমে থাকেন নি, নতুন স্বপ্ন দেখে আইআইটি মাদ্রাজ থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন পরিষেবার সদস্য হন তিনি। অবশেষে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এস্টাব্লিশমেন্টে একজন বিজ্ঞানী হন আব্দুল কালাম। ১৯৬৯ সালে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। এরপর ব্যালিস্টিক মিসাইলের জন্য প্রজেক্ট ডেভিল এবং প্রজেক্ট ভ্যালিয়ান্টের দায়িত্ব পান তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই অগ্নি, আকাশ, নাগ, পৃথিবী এবং ত্রিশূলের মতো ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছিল ভারত। এই সফলতার কারণে দেশের 'মিসাইল ম্যান' হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি।