আদি শঙ্করাচার্য হলেন হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান শিক্ষক। ধর্মীয়, দার্শনিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শঙ্করাচার্য তাঁর জীবনকালে বেদান্ত দর্শনকে প্রচার করেছিলেন এবং তাঁর গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেছিলেন অনন্তকালের উপাদানগুলি। আদি শঙ্করাচার্যের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পালন করা হয় আদি শঙ্করাচার্য জয়ন্তী। এই দিনে শঙ্করাচার্যের চিন্তাভাবনা এবং শিক্ষাগুলি স্মরণ করা হয়। ২০২৪ সালে আদি শঙ্করাচার্য জয়ন্তী পালন করা হবে ১২ মে।
৫০৮-৯ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান কেরলের কালাদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন আদি শঙ্করাচার্য। তাঁর মায়ের নাম আর্যম্বা এবং বাবার নাম শিবগুরু। মাত্র ১২ বছর বয়সে বেদান্ত প্রচারের জন্য গৃহত্যাগ করে অরণ্যে এবং পাহাড়ে ঘুরে বেড়িয়ে ওমকারেশ্বরে জ্ঞান লাভ করেন আদি শঙ্করাচার্য। পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে কাশী চলে গিয়েছিলেন তিনি। আদি শঙ্করাচার্যের অদ্বৈত বেদান্তের কারণেই বর্তমানে ভারত একত্রিত। শাস্ত্র অনুযায়ী, ৩২ বছর বয়সে দেশের চার কোণে চারটি পীঠস্থান তথা জ্যোতিষপীঠ বদরিকা আশ্রম, শ্রেঙ্গেরী পীঠ আশ্রম, দ্বারকা শারদা পীঠ এবং পুরী গোবর্ধন পীঠে চারটি মঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আদি শঙ্করাচার্য। কথিত আছে হিমালয়ের কেদারনাথে ৩২ বছর বয়সে জীবন ত্যাগ করেন তিনি।
দেশের চার কোণে অবস্থিত চারটি পীঠস্থানের প্রধানকে বলা হয় শঙ্করাচার্য। এই চারটি মঠ বা পীঠস্থানের প্রতিষ্ঠা করার পর আদি শঙ্করাচার্য তার চারজন গুরুত্বপূর্ণ শিষ্যকে এই মঠের দায়িত্ব দিয়ে চলে যান। সেই থেকে ভারতে চালু হয়েছে শঙ্করাচার্য প্রথা। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, গুরু তাঁর শিষ্যদের যে স্থানে শিক্ষা ও জ্ঞান প্রদান করেন সেই স্থানকে বলা হয় মঠ। শঙ্করাচার্য হওয়ার জন্য প্রথম যোগ্যতা হল সন্ন্যাসী অর্থাৎ পারিবারিক জীবনের থেকে সরে গিয়ে ত্যাগ, তৃপ্তি এবং পিন্ডদান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র একজন ব্রাহ্মণ হতে পারেন শঙ্করাচার্য। তাঁর বেদের সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। এই প্রক্রিয়াগুলির পর শঙ্করাচার্য, আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর, সম্মানিত সাধুদের সমাবেশ এবং কাশী বিদ্যা পরিষদের সিলমোহরের পরেই পাওয়া যায় শঙ্করাচার্যের পদ।