কলকাতা, ১৫ জানুয়ারি: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) কলকাতা সফরের বিরোধিতায় গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে (Mamata Banerjee) ঘেরাও এবং ধর্মতলা অবরোধ করে রাখার ঘটনায় স্বতঃপ্রনোদিত মামলা (Suo motu case) রুজু করল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী, সোমবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় দেড়শো জন অজ্ঞাতপরিচয় আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তাতে সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া, অশান্তি বাধানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিনের ঘটনার নানা ফুটেজ দেখে আন্দোলনকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় টানা আন্দোলনে নেমেছেন মমতা ব্যানার্জি। ছাত্র-যুবদেরও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে আবেদন করেছেন। যদিও বাম ছাত্রদের প্রতি অন্য আচরণ করছে পুলিশ। যাদবপুরের পড়ুয়াদের ওপরে লাঠি চালিয়েছিল পুলিশ। ধর্মতলার ঘটনায় এ বার জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হল। তাই আন্দোলন সম্পর্কে সরকারের মনোভাব ঠিক কী, তা নিয়েই ধন্দে অনেকে।
রাজভবনে বৈঠক করার পরে মিলেনিয়াম পার্কের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণে মোদি ও মমতার মধ্যে সেটিং হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে ধর্মতলার রানি রাসমণি রোডে TMCP-র ধরনা মঞ্চে সামনে বিক্ষোভ দেখাল বামপন্থী পড়ুয়াদের একাংশ। মঞ্চে তখন উপস্থিত রয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পুলিশি ব্যারিকেড দিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আড়াল টানার চেষ্টা সত্ত্বেও কয়েকবার ধস্তাধস্তি হতে দেখা যায়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাথা গরম করবে না। শান্ত হও।’’ আরও পড়ুন: Babul Supriyo: 'সিএএ-এর উপজীব্য সঠিকভাবে না বুঝলে আমি রাহুল গান্ধিকে সিএএ-এর একটা ইতালিয়ান কপি পাঠাব' বিতর্ক বাড়ালেন বাবুল সুপ্রিয়
মমতাকে ঘিরে বিক্ষোভ:
Unprecedented. Protestors shouting front of Mamata Banerjee.
The last time Kolkata witnessed this kind of protests and anger on the streets was in 2007. We know the result. This may well be a turning point again. #GoBackModiFromBengal pic.twitter.com/krkACkbuuw
— Aparna (@chhuti_is) January 12, 2020
এদিকে পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, আন্দোলনকারীদের শিক্ষা দিতে নয়, বরং নিজেদের পিঠ বাঁচাতেই এই মামলা রুজু করা হয়েছে। আদালতে মামলা হলে লালবাজারের কর্তারা পরে এটা অন্তত বলতে পারবেন যে, পুলিশ পুরো নিষ্ক্রিয় ছিল না। আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘আপাতত কাউকেই গ্রেপ্তার করা হবে না।’’ কিন্তু অনেকেই বলছেন, জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে কার্যত ভয় দেখিয়ে রাখল পুলিশ। যাতে ভবিষ্যতে আন্দোলন করলে জেলে যাওয়ার ভয়টা মানুষের মধ্যে কাজ করে। জানা যাচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হবে না বললেও অভিযোগ, নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী মহম্মদ আকিল নামে এক যুবককে মঙ্গলবার রিপন স্ট্রিট থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। লালবাজার অবশ্য জানিয়েছে, তাঁকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। শুধু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাতে ছেড়েও দেওয়া হয়।