লোকসভায় সংবিধান বিতর্কেও সেই জওহরলাল নেহরুর দিকেই তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহরুকে সব বিষয়েই কাঠগড়ায় তোলেন, এমন অভিযোগে বিরোধীরা মোদীকে নিয়ে বারবারই কটাক্ষ করেন। শনিবার সংসদে দাঁড়িয়ে সংবিধান বিতর্কেও নেহরুকেই কাঠগড়ায় তুললেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী এদিন তাঁর সংসদে বক্তৃতায় দাবি করেন, "সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নেহরু দেশের এক মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে লেখেন, যদি সংবিধান আমাদের কাছে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে যে কোনোও মূল্যে সংবিধানে বদল আনতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রীদের লেখা চিঠির পর ১৯৫১ সালে পাপ কাজটা করা হয়। কিন্তু সেই সময় দেশ চুপ ছিল না। সেই সময় প্রেসিডেন্ট ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদ তাঁকে সেই ভুলটা নিয়ে সতর্ক করেছিলেন। স্পিকারও সেই সময় বলেছিলেন, উনি (নেহরু) যেটা করছেন সেটা ভুল। আচার্য কৃপালিনী, জয়প্রকাশ নারায়ানের মত সেই সময়ের মহান কংগ্রেস নেতারা তাঁকে সতর্ক করেছিলেন, কিন্তু কারও কথাই কানে তুনে তোলেননি। আসলে পন্ডিত নেহরু-জির নিজস্ব সংবিধান ছিল। তাই তিনি তার দলের সিনিয়র নেতাদের পরামর্শ না করেই পাপ কাজটা করেছিলেন।"
এরপর আরও বড় অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, " দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১২টি রাজ্যের কংগ্রেস কমিটি সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের নাম প্রস্তাব করেছিল। একটি প্রদেশ কমিটিও নেহরু-জির পাশে ছিল না। সংবিধান অনুযায়ী তাই দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল সর্দার প্যাটেলের।
দেখুন মোদীর বিস্ফোরক অভিযোগ
#WATCH | Constitution Debate | In Lok Sabha, PM Narendra Modi says, "The then PM, Pandit Nehru had written a letter to Chief Ministers. In his letter, he wrote - "if the Constitution comes in the way…we must make change in the Constitution at any cost." Nehru ji wrote this in a… pic.twitter.com/FYIHPRnUR0
— ANI (@ANI) December 14, 2024
সংসদে সংবিধান বিতর্কে একেবারে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যায় মোদীকে। চলতি বছর লোকসভা ভোটে একেবারেই প্রত্যাশিত ফল হয়নি মোদীর। কংগ্রেস ছন্নছাড়া অবস্থায় লোকসভা ভোটে নামলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে কিছুটা দূরেই থমকে যেতে হয় বিজেপি-কে। নীতীশ কুমার, চন্দ্রবাবু নাইডু-দের সমর্থনে সরকারে ফিরলেও, ইসবার ৪০০ পাড়ের স্লোগান একেবারে ব্যর্থ হওয়ায় মোদীর আফশোস আছে। আর রসোকসভা ভোটে মোদীর হতাশজনক ফলের পিছনে রাহুল গান্ধী সহ বিরোধী নেতাদের, বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে সংবিধান বদলে দেবে এমন সাবধানবাণী বড় ভূমিকা নিয়েছিল। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় বিজেপির ভরাডুবির পিছনেও বিরোধীদের সংবিধান অস্ত্র বড় কাজে দিয়েছিল বলে বিশেষজ্ঞদের মত। আর সেই কারণেই সংবিধান বিতর্কে গা ঝাড়া দিতেই এদিন সংসদে এতটা আক্রমণাত্মক মোদী, এমনটাই বলছে রাজনৈতিক মহল।