প্রতীকী ছবি (Photo Credit: Pixabay)

বেঙ্গালুরু: 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' কেলেঙ্কারিতে (Digital Arrest Scam) ১১.৮ কোটি টাকা খোয়ালেন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ৩৯ বছর বয়সী সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার (Software Engineer) বেঙ্গালুরুর হেব্বালে ডিজিটাল গ্রেফতারের শিকার হন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ওই ব্যক্তি গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে টাকা খুইয়েছেন। প্রতারকরা ইঞ্জিনিয়ারকে টেলিকম রেগুলেশন অফ ইন্ডিয়া (TRAI ) অফিসার হিসাবে পরিচয় দেন, তারপর তাঁর আধার ও সিমকার্ডের প্রতারণামূলক ব্যবহার সম্পর্কে তথ্য দিয়ে হুমকি দিতে শুরু করেন। ভুক্তভোগী বিক্রমকে তাঁরা বলেন, যে তাঁর নামে কেনা সিম কার্ড অবৈধ বিজ্ঞাপন এবং হুমকি কল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে, তাঁর সিম ব্লক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং মুম্বইয়ের কোলাবা সাইবার পুলিশ স্টেশনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দ্বিতীয়বার প্রতারকদের  হুমকি ফোন

কিছু দিন পর, অন্য একজন প্রতারক ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং নিজেকে পুলিশ অফিসার হিসাবে পরিচয় দেন। তিনি বিক্রমকে বলেলেন যে তাঁর আধারকার্ড মানি লন্ডারিংয়ের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বিক্রমকে সতর্ক করেন যে তিনি তাঁর পরিবার সহ কাউকে এই কল সম্পর্কে যেন না বলেন, কারণ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ইতিমধ্যেই অর্থ পাচারের মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন। ভার্চুয়াল তদন্তে সহযোগিতা না করলে তাঁকে শারীরিকভাবে গ্রেফতার করার হুমকি দেওয়া হয়।

ভুক্তভুগীকে স্কাইপ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে বাধ্য করা

এরপর বিক্রমকে স্কাইপ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে বলা হয়, প্রতারকরা তাঁকে অ্যাপটি ডাউনলোড করতে একপ্রকার বাধ্য করে। এরপর পুলিশ ইউনিফর্মে একজন ব্যক্তি মুম্বই পুলিশের বলে দাবি করে একটি ভিডিও কল করে সেখানে। তিনি অভিযোগ করেন যে ব্যবসায়ী নরেশ গোয়েল বিক্রমের আধার ব্যবহার করে কানারা ব্যাঙ্কে একটি অ্যাকাউন্ট খুলেছেন এবং প্রায় ৬ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন। এরপর ২৫ নভেম্বর, অন্য একজন ভুয়া পুলিশ অফিসার স্কাইপে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তিনি দাবি করেন যে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে।

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নাম করে প্রতারণা

প্রতারকরা ইঞ্জিনিয়ারকে বলেন যে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) নির্দেশিকা অনুসারে, তাঁদের তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেনগুলি যাচাই করতে হবে। বিক্রমকে এর জন্য অর্থ স্থানান্তর করতে বলা হয়েছিল। গ্রেফতারের ভয়ে, বিক্রম প্রথমে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৭৫ লক্ষ টাকা এবং পরে অন্য অ্যাকাউন্টে ৩.৪১ কোটি টাকা স্থানান্তর করেন। এভাবে তিনি প্রতারকদের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ১১.৮ কোটি টাকা স্থানান্তর করেন। প্রতারকরা যখন আরও টাকা চান তখন বিক্রম বুঝতে পারেন যে কিছু একটা ভুল হয়েছে। গত ১২ ডিসেম্বর বিক্রম পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।