আইপিএস মেরিন জোসেফ (Photo Credit: Twitter)

কোল্লাম, ১৮ জুলাই: দিনের পর দিন ধরে ধর্ষিতা হওয়ায় মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে পারেনি বছর ১৩-র নির্যাতিতা। ভয়ঙ্কর শারীরিক ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল সে। সুস্থ হওয়ার পর বাড়ির লোকজন তাকে আর ফিরিয়ে নেয়নি। ঠাঁই হয় সরকারি হোমে, সেখানেই তীব্র মানসিক আঘাতে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। নির্যাতিতার করুণ কাহিনী জেনে চোখে জল এসেছিল কেরালার মহিলা আইপিএস (Kerala IPS Officer) মেরিন জোসেফের। তাইতো রিয়াধ থেকে গ্রেপ্তার করে আনলেন ধর্ষক (Child Rapist) সুনীল কুমার ভদ্রনকে(৩৮)। আরও পড়ুন-বাবা-মায়ের দাম্পত্য কলহে অতিষ্ঠ ছেলে, স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছাল চিঠি

মেরিন জোসেফ  (Merin Joseph)  কোল্লামের কমিশনার পদে রয়েছেন। নির্যাতিতা কিশোরীর যন্ত্রণার কাহিনী তাঁর মতো লৌহমানবীর মনেও দাগ কাটে, সেদিনই মনে মনে ঠিক করে ফেলেন এই নারকীয় ঘটনার জন্য দায়ী যে লোকটি তাকে শাস্তি দিতেই হবে। রিয়াধের (Saudi) মাটিতে পা দেওয়ার আগেই মনে মনে সংকল্প করে ফেলেছিলেন কোল্লামের এই দুঁদে আইপিএস অফিসার। যেমন করেই হোক অপরাধীকে বাগে আনবেনই তিনি। মাসের পর মাস বছর তেরোর কিশোরীর উপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে যে, তাকে ছাড়া যাবে না কোনও ভাবেই। তাঁর পরিকল্পনা সফল হয়েছে, গত মঙ্গলবারই রিয়াধ থেকে ধৃতকে নিয়ে কোল্লামে ফিরেছেন ওই আইপিএস। ধর্ষককে নাগালে পেয়েই ফের শুরু তদন্ত।

জানা গিয়েছে ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭-তে। কোল্লামের সরকারি মহিলা মন্দিরম হোমের এক নাবালিকার আত্মহত্যার ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ জানায়, নিজের পাড়ারই এক কাকুর যৌন লালসার শিকার হয়েছিল ওই কিশোরী, মানসিক শারীরিক যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে মৃত্যুকে বেছে নিয়েছে সে। এই ঘটনায় রা কাড়েনি নির্যাতিতার পরিবার, তবে এক আত্মীয় ধর্ষক সুনীল কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সুনীল নির্যাতিতার প্রতিবেশী শুধু নয়, তার কাকার বন্ধুও বটে। কর্মসূত্রে সে রিয়াধে থাকে। কিশোরীর পরিবার মুখে কুলুপ আঁটলেও এগিয়ে আসেন নির্যাতিতার এক আত্মীয়। তিনিই অভিযোগ করেন সুনীল কুমারের নামে। জানা যায়, সুনীলের বাড়ি ওই নাবালিকার বাড়ির কাছেই। মেয়েটির এক কাকুর বন্ধু সুনীল। কর্মসূত্রে থাকে রিয়াধে। ওই বছর সে কোল্লামে নিজের বাড়িতে ফিরেছিল। এরপর একদিন চকলেটের লোভ দেখিয়ে কিশোরীকে নিজের বাড়িতে ডেকে যৌন নির্যাতন চালায়। লাগাতার তিন মাস ধরে ধর্ষণ করে। হুমকি দিয়ে নির্যাতিতার মুখ বন্ধ করলেও এক সময় কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিপদ বুঝে ফের রিয়াধে পালিয়ে যায় সুনীল। সেই আত্মীয়র জন্য ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে, পরে তিনিও আত্মঘাতী হন।