নয়াদিল্লি: কল্পনা চাওলা এক সাহসের নাম, ভারতবাসীর গর্বের ও আবেগের নাম কল্পনা চাওলা (Kalpana Chawla)। বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ নারীর অনুপ্রেরণার প্রতীক তিনি। ভারতের হরিয়ানার একটি ছোট শহর থেকে মহাকাশ ছুঁয়ে দেখার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। সেই সময়ে আরও বেশি প্রকট লিঙ্গ বৈষম্য সময়ে কল্পনা চাওলাকে তাঁর পড়াশুনা থেকে ক্যারিয়ার জুড়ে অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিদেশে ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন মহিলা হিসাবেও তাঁকে সাংস্কৃতিক ও নানান বাধা পেরোতে হয়েছে। সব বাধা কাটিয়ে তিনি নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে নিজের সম্মান অর্জন করেন। ১৯৯৭ সালের ১৯ নভেম্বর আজকের দিনে প্রথমবার মহাকাশে পাড়ি দেন কল্পনা চাওলা। তিনিই প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা যিনি মহাকাশে পাড়ি দেন।
১৯ নভেম্বর মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার সময় কল্পনার বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর। কলম্বিয়া STS-87 মহাকাশযানে চড়ে ১.০৪ কোটি মাইল পাড়ি দিয়েছিলেন। সেবার ৩৭২ ঘণ্টা মহাকাশে ছিলেন কল্পনা ও তাঁর সঙ্গীরা। এরপর ২০০১ সালে দ্বিতীয়বার কলম্বিয়া স্পেস শাটল STS-107-এর মহাকাশচারীদের তালিকায় তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়।
কল্পনা চাওলা হরিয়ানার কর্নালে ১৭ মার্চ ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা হরিয়ানা থেকেই করেছিলেন। এর পর ১৯৮২ সালে তিনি পাঞ্জাব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ১৯৮৪ সালে আমেরিকা পৌঁছেন এবং টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মহাকাশবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি করেন। ১৯৮৮ সালে আমেরিকার কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে ডক্টরেট করেন। এই ডিগ্রি অর্জনের পর নাসার দরজা তার জন্য খুলে যায় এবং তিনি ১৯৮৮ সাল থেকেই নাসাতে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ হিসাবে নাসার STS-87 মিশনে অংশগ্রহণ করবেন বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।
২০০৩ সালে ১লা ফেব্রুয়ারি আমেরিকান স্পেস এজেন্সি নাসার স্পেস শাটল কলম্বিয়া পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তাতে সাতজন নভোচর নিহত হন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী কল্পনা চাওলাও ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। তবে মানুষ কিন্তু কল্পনা চাওলাকে আজও ভোলেননি। আজও কল্পনা রয়ে গিয়েছেন চর্চায়।