আমেদাবাদ, ২৯ জুলাই: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে সন্তানের জন্ম হয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে লোকলজ্জার ভয়ে মুখ দেখাতে পারবেন না। তাই একরত্তিকে মেরে কালের জলে ভাসিয়ে দিয়েছিল মা। এমন গর্হিত অপরাধ করেও কোনওরকম সাজা ভুগতে হয়নি আশা রাঠৌরকে। কেনই বা হবে, তার তো ভরা সংসার। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে এখন নিজের আলাদা সংসার। তাই পুলিশেরও কোনও সন্দেহ হয়নি। কিন্তু এতবড় পাপ তো বেরিয়ে আসবেই। তাইই হল তদন্তে নেমে আশা রাঠৌরকেই জেরা শুরু করল পুলিশ। কেঁচো খুঁড়তেই সাপ বেরিয়ে এল। আরও পড়ুন-‘জয় শ্রী রাম’ না বলায় মুসলিম কিশোরকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, উত্তরপ্রদেশে শোরগোল
পুলিশ জানিয়েছে, গুজরাতের কাইরা জেলার কথলাল থানা এলকায় থাকে আশা রাঠৌর। ২০০৯ সালে তার বিয়ে হয়। দুটি সন্তানও রয়েছে। ২০১৫ সালে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওাতে তাদের বিচ্ছেদের মামলা শুরু হয়, সেসব এখনও চলছে। সেই সময় থেকেই ছেলেমেয়েদের নিয়ে আলাদা থাকে আশা। সম্প্রতি এক যুবকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা হয়। সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ে আশা। সেই ঘরেই জন্মায় নতুন প্রাণ। মাসদুয়েক আগে বদোদরার কাছে নাদিয়াড় জেলায় একটি স্থানীয় হাসপাতালে শিশুর জন্ম দেয় আশা। বাচ্চা তো হয়েছে, লোকজনকে বাবার পরিচয় কী দেবে ভাবতে ভাবতেই দেড়মাস কেটে যায়। শেষমেশ লোকলজ্জা থেকে বাঁচতে শিশুসন্তানকেই সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সে। একদিন একরত্তিকে খুন করে খালের জলে ভাসিয়েও দেয়। পরে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে খুনের কিনার করতে পারেনি।
মাঝখানে দুটো মাস কেটে গেলেও কোনা সমাধানসূত্র না মেলায় ফের তদন্ত শুরু করে কথলাল থানার পুলিশ। যেসময় দেহটি উদ্ধার হয়েছিল, সেই সময় হিসেব করে আশপাশের এলাকার সমস্ত হাসপাতালে নার্সিংহোমে খোঁজখবর শুরু হয়। ডেটা রেকর্ড মিলিয়েও প্রথম দিকটায় তেমন কোনও সুবিধা করতে পারেনি তদন্তকারীরা। পরে নাদিয়াড় জেলার এক গ্রামীণ হাসপাতালে আশা রাঠৌরের নাম পাওয়া যায়। পুলিশ তার বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েই অসঙ্গতি টের পায়। কোনও শিশুসন্তান সেবাড়িতে নেই। পরে জেরার মুখে সত্যি ঘটনা খুলে বলে আশা। সদ্যোজাত সন্তানকে খুনের অভিযোগে আশা রাঠৌরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।