Narendra Modi. (Photo Credits: X)

নতুন দিল্লি, ৮ জুন: আসন অনেকটা কমলেও জোট দলগুলির সাহায্য নিয়ে আরও একবার দেশের ক্ষমতায় ফিরছেন নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। ২০১৪, ২০১৯-এর পর এবার ২০২৪। টানা তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নজর গড়ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৪০০ পাড়ের ধারেকাছেও আসতে পারেনি বিজেপি। তবু জোট দলগুলির সাহায্য নিয়ে ক্ষমতায় ফিরছেন মোদী। আর ক দিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করবেন মোদী। এবার মোদী-কে তাঁর মন্ত্রিসভায় এনডিএ-র অনেক দলগুলিকে জায়গা দিতে হবে।

স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি-র সাংসদরা তুলনামূলকভাবে এবার মন্ত্রিসভায় কম জায়গা পাবেন। এনডিএ-র কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় চন্দ্রবাবু নাইডু-র তেলগু দেশম, নীতীশ কুমারের জেডি (ইউ), চিরাগ পাসোয়ান-এর আরএলডি, একনাথ শিন্ডের শিবসেনার প্রতিনিধি বেশী থাকতে চলেছে। লোকসভার স্পিকার পদ নিয়ে বিজেপির সঙ্গে দর কষাকষি শুরু করেছেন চন্দ্রবাবু ও নীতীশ কুমার। আরও পড়ুন-বারামুল্লাতে গৃহস্থলী বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! কোনওমতে প্রাণে বাঁচলেন বাড়ির সদস্যরা

তবে এসব তো হচ্ছে মোদী ৩ মন্ত্রিসভা নিয়ে। একবার পিছনে ফিরে দেখে নেওয়া যাক আগের কথা।

মোদী তিন মন্ত্রিসভা গঠনের আগে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক মোদী ২ সরকারের সাফল্য-

১) সাহসী পদক্ষেপ: দ্বিতীয় মোদী সরকার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে গিয়েছে। রেকর্ড জনাদেশ পেয়ে ক্ষমতায় এসে মোদী-অমিত শাহ তাদের লক্ষ্যপূরণের জন্য সাহসী পদক্ষেপ করেছেন। তা নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ-সমালোচনা শুনতে হয়েছে। সেসব সাহসী পদক্ষেপ রাজনৈতিক দিক থেকে কখনও বিজেপিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে, তো কখনও পিছিয়ে দিয়েছে। সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার, জম্মু-কাশ্মীর থেকে লাদাখকে আলাদা করে স্বায়ত্ত শাসন, পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে রাখা। পাশাপাশি তিন তালাক আইন তুলে সব মহলে প্রশংসা পায় মোদী সরকার।

২) চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি: ভারত আয়তন ও জনসংখ্যায় অনেকটা বড়। অর্থনীতিতে তার বড় প্রভাব আছে। জাপান, জার্মানি, রাশিয়ার পিছিয়ে পড়ার সুযোগ নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের স্বীকৃতি পায়।

৩) ডিজিটাল ইন্ডিয়া: ভারতকে প্রকৃত অর্থে ডিজিটাল দেশকে বানানোর পিছনে বড় ভূমিকা নেয় মোদী ২ সরকার। দেশের প্রায় প্রতিটি প্রান্ত ইউপিআই লেনদন অভ্য়াসে পরিণত হয়েছে। ডিজিটাল লেনদনের পরিমাণ গত ৬ বছরে বেড়েছে ৭ হাজার কোটি টাকারও বেশী। ফাইভ জি নেটওয়ার্ক পরিষেবায় ব্যবহারকারীর সংখ্যায় বিশ্বের প্রথম সারিতে চলে আসা গিয়েছে। সরকারী পরিষেবা পুরোপুরি ডিজিটাল করা সম্ভব হয়েছে।

৪) জনধন যোজনা: দেশের সব মানুষের ব্য়াঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার পর সেভিংস ডিপোজিটে ১৯৭ শতাংশ বেড়েছে। জনধন যোজনা বহু দেশের বহু মানুষের উপকার করেছে।

৫) কর, জিটিএস সংগ্রহ ও পরিকাঠামোয় উন্নতি: ২০১৭ সালে জিএসটি চালুর পর দ্বিতীয় মোদী সরকার কর সংগ্রহে জোয়ার আনে। কর সংগ্রহ ভাল হলে দেশ আর্থিক দিক থেকে মজবুত হবে, সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। সেটা বুঝতে পেরে কর সংগ্রহে রেকর্ড করে মোদী ২ সরকার।  এখন দেশে বার্ষিক জিএসটি রেভিনিউ ২০ লক্ষ কোটি টাকা। যার সুফল পাচ্ছে দেশ। কর পরিকাঠামোয় উন্নয়নও মোদী সরকারের বড় সাফল্য।

৬) দেশের জাতীয় সড়ক পরিকাঠামোয় উন্নয়ন: দেশের জাতীয় সড়ক ও সড়কের সম্প্রসারণে রেকর্ড গড়েছে মোদী সরকার। মোদী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী নীতীন গড়করি  দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে দেশকে নয়া উচ্চতায় পৌঁছে দেন।

৭) বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সহ রেল পরিকাঠামোয় উন্নয়ন: বন্দে ভারত সহ দেশের রেল পরিকাঠামো, রেকর্ড পরিমাণ রেল লাইনের সম্প্রসারণ করে বাহব পায় মোদী সরকার।

৮) আয়ুস্মান ভারত, উজ্জ্বলা যোজনা, আবাস যোজনা সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্প: এই ধরনের একাধিক প্রকল্পের সুবিধা পায় দেশের কয়েক কোটি মানুষ।

৯) আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারসাম্য বজায় রেখে মাথা উঁচু করে থাকা: একদিকে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ, অন্যদিকে, ইজরায়েল-ইরান, রাশিয়া-ইউক্রেন, চিন-তাইওয়ান উত্তেজনা। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে খুব কঠিন সময়ে সব কিছু ভারসাম্য রক্ষা করে দেশকে প্রাসঙ্গিক রাখতে পেরেছেন মোদী। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে গ্লোবাল লিডারের তকমাও পেয়েছেন মোদী।

১০) কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ায় দক্ষতা: এত বড় দেশে কঠিন সময়ে দেশের বেশীরভাগ মানুষকে করোনা ভ্যাকসিন দিয়ে প্রশংসা পায় মোদী সরকার।