মঞ্চে উঠে গান-নাচ-কবিতা বলতে এখনো অনেকেই ভয় পান, সামনে বসে থাকা দর্শকদের দেখে অনেকেই ঘাবড়ে যান। একগাদা মানুষের সামনে কিছু বলা বা প্রেজেন্ট করতে গিয়ে সব গুলিয়ে ফেলার ভয়। স্টেজে পৌঁছেই ঘেমে নেয়ে একশা হওয়া, বারবার হোঁচট খাওয়া বা যা যা বলার সব গুলিয়ে পাকিয়ে তাল করাটা এই ভয়ের বহিঃপ্রকাশ।এই সময়ে দাঁড়িয়ে অনেক চিন্তিত মা-বাবাই তাদের ছেলেমেয়েদেরভয় কাটাতে বিভিন্ন ক্লাসের দারস্থ হয়েছেন । কিন্তু এসমস্ত ক্লাস বা কোর্স আগে ছিল না , ছিল না অনেক খ্যাতনামা তারকা বা পারফর্মারদের সময়কালেও। কিন্তু ভয়টা ছিল।যেমন ছিল কিশোর কুমারের ক্ষেত্রেও। আসুন সে গল্প শুনে নিই
একদিন খোলা মঞ্চে গান গাওয়ার জন্য ডাক পড়েছে কিশোর কুমারের। সঙ্গে শিল্পীদের তালিকায় রয়েছেন পঞ্চমদা অর্থাৎ রাহুল দেব বর্মণ, লতা মঙ্গেশকরও। এমন সব তারকাদের মঞ্চে দেখতে শ্রোতাদের ভিড় উপচে পড়ছে। সেই সময় কিশোর কুমারকে মঞ্চে ডাকা হয়েছে, তিনি তো স্টেজে উঠেই অত লোক দেখে ভয়ে আবার পর্দার আড়ালে চলে গেলেন। কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চমদা। তিনি তৎক্ষণাৎ কিশোর কুমারকে খপ করে ধরে ফেললেন। তিনি সেই সময় ধরে না ফেললে সেই মুহূর্তে হয়তো পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়েই যেতেন কিশোর কুমার। তখন কিশোরদাকে শান্ত করতে পঞ্চম দা বললেন, আরে ভয় কেন পাচ্ছ? দর্শকাসনে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা থোড়াই কেউ লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁশলে, এস ডি বর্মন, কিশোর কুমার? কিশোরদা ভাবলেন, সত্যিই তো! ওঁরা তো কেউ লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁশলে, এস ডি বর্মন, নন। আমি কেন তবে ভয় পাচ্ছি? ব্যস ভয় দূরে ঠেলে চলে গেলেন মঞ্চে।স্টেজে গান গাইতে উঠে পঞ্চমদার বলা এই কথাটিই নাকি পরবর্তীকালে অনুপ্রেরণা জোগাত কিশোর কুমারকে। এভাবেই খোলা মঞ্চে গাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করতেন কিশোরদা নিজেকে। তারপর তো বাকিটা ইতিহাস । মঞ্চে উঠে নেচে গেয়ে এরকম পারফর্মার ভারতে আর দুজন শিল্পীকেও পাওয়া যায় নি।জন্মদিনের প্রাক্কালে রইল কিশোর কুমারের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য।