নয়াদিল্লি, ২০ মে: আম্ফান ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে শহরে উল্টে গেল গাড়ি। সুপুরি গাছের মত দুলছে ল্যামপোস্ট। শেষ কবে এমন ঝড় দেখেছে কলকাতা, তা জানা নেই! তবে ঝড় বিশেষজ্ঞদের কথায়, ১৭৩৭ সালেও এমন ভয়াবহ ঝড় দেখে কলকাতা। সাইক্লোনের ঝাপটায় সেবার ৪০ ফুট পর্যন্ত উঠেছিল গঙ্গার জল। কয়েকহাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। এমন ঝড়ে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষতির সম্মুখীন হয় সুন্দরবন, কাকদ্বীপ, দীঘা-সহ উপকূলবর্তী এলাকা। তবে, গত বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের মত এবারও আম্ফানের ক্ষয়ক্ষতি ভয়ঙ্কর হলেও কিছুটা হলেও হয়তো রোধ করা সম্ভব হয়েছে। এড়ানো গেছে প্রাণহানির ঘটনাও। আর এই বিষয়টির নেপথ্যে রয়েছেন আবহবিজ্ঞানী তথা সাইক্লোন ম্যান মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র।
গত ২৭ বছর ধরে আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করছেন মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র। ২০০৮ সাল থেকে তাঁর সতর্কবাণীতেই একের পর এক ভয়ঙ্কর ঝড়ের আগাম আভাসে পরিস্থিতি সামলেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। এর জেরে রাষ্ট্রসংঘ থেকে এবং দেশের ক্রান্তীয় এলাকার যে ১৩ টি দেশ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে, তাদের থেকেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি এবং তাঁর দল। আম্ফানের সতর্কবার্তাও দেন তিনি। সেই মত সকলকে অতি দ্রুত কমবেশী প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যার জেরে ক্ষয়ক্ষতি হলেও প্রাণহানির আশঙ্কা বেশ কম। কারণ আম্ফান ঘূ্র্ণিঝড়ের শুরু থেকেই একের পর এক পূর্বাভাসে সতর্ক ছিল উড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গ। ঘূর্ণিঝড় কোথায় আছড়ে পড়তে পারে, ঝড়ের গতিবেগ কত হতে পারে, সেই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যই সময়মত জানিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র। আরও পড়ুন: Cyclone Amphan: ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু
মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র ১৯৯২ সালে পুণের আবহ দফতর থেকে শুরু করেছিলেন কেরিয়ার৷ উড়িষ্যার বালাসোরে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সংস্থাতেও বেশ কিছুদিন কাজ করেছেন তিনি৷ ২০০৮ সাল থেকে ভারতীয় আবহবিজ্ঞান শাখার আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞ শাখার প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র৷ ২০১৯ সালের আগাস্ট মাসে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ভারতীয় আবহবিজ্ঞান দফতরের প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন মৃত্যুঞ্জয়৷