করোনা মহামারীর সময় বলিউডেও বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। তবে সবথেকে বেশি নজর কেড়ে নিয়েছেন অভিনেতা সোনু সুদ (Actor Sonu Sood)। শুধু সেলুলয়েডেই নয় একেবারে বাস্তবের রুখাশুখা মাটিতে তিনিই নায়ক। মহামারীর সংক্রমণ রুখতে যখন দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হল, মাসের পর মাস ঘরবন্দি থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা একটা পয়সাও রোজগার করতে পারেননি। বরং পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়েইপথেই প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের ত্রাতার ভূমিকা অবতীর্ণ হয়েছিলেন সোনু সুদ। নিজের টাকায় হাজার হাজার শ্রমিককে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। মূলত কর্মহীন শ্রমিকদের অন্ন সংস্থানে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু আধপেটা খেয়ে থাকা মানুষগুলি তাঁর কাছে বাড়ি ফেরানোর আর্জি জানায়।
সোনু সুদ দুবার ভাবেননি। নিজেই বাস ভাড়া করে বিমানের টিকিট কেটে সেই সব পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁর প্রিয়জনদের কাছে ফেরত পাঠিয়েছেন। এই বিরাট কর্মকাণ্ডের জন্য দেশবাসী তাঁকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি প্রাণভরে আশীর্বাদও করেছে। তবে নিন্দুকরা তো সব জায়গাতেই থেকে যায় এখানেও ছিল। তাইতো সোনু সুদ কোথা থেকে এত টাকা পেলেন পরিযায়ী শ্রমিকদের উপকার করার জন্য তা জানতে উসখুশ করছিল। আচমকাই তারা বলতে শুরু করে বিশে, রাজনৈতিক দলের সুবিধা নিয়ে জনগণের কাছে হিরো বনেছেন সোনু সুদ। এই খবর প্রকাশ্যে আসতে নিজেই মুখ খুললেন অভিনেতা। জানান, তিনি যেহেতু কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন, তাইতো নিজের মতো করে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। অন্ধপ্রদেশের দুই বোনকে স্কুলের পড়ার ব্য়বস্থা করে দেওয়ার পাশাপাশি কৃষক বাবাকে কিনে দিয়েছেন ট্রাক্টর। যোগীর রাজ্যের আইন পড়ুয়া তরুণীর হাঁটুর অস্ত্রোপচারের বন্দোবস্ত করেছেন। বেনারসের গঙ্গার গাটের মাঝিদের দৈন্দিন রেশনের ব্যবস্থা করে ত্রাতার ভূমিকায় সেই সোনু সুদ। আরও পড়ুন-Netaji 125th birth anniversary: এবার হাওড়া কালকা মেলের নাম বদলে নেতাজি এক্সপ্রেস, সুভাষচন্দ্রের ১২৫-তম জন্মদিনে রেলমন্ত্রকের শ্রদ্ধার্ঘ্য
সম্প্রতি জানতে পেরেছেন, তাঁর নামে বিনামূল্যে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু হয়েছে তেলেঙ্গানায়। যা অন্ধ্রপ্রদেশ পর্যন্ত চলবে। গরীব মানুষের কাজে লাগবে এই অ্যাম্বুল্যান্স। দেশের মানুষ যে তাঁকে ভালবেসে এই কাজ করছেন, জানতে পেরে অভিভূত সোনু সুদ বলেন, বাবা-মাকে যদি দেখাতে পারতাম। তাঁরাই আমার কাছে দেবতা। আসলে আমরা ভাল কাজ দেখার সুযোগ পাই খুব কম। তাই কেউ ভাল কাজ করলে এক শ্রেণির মানুষ তা ভাল চোখে নেয় না। কেন কেউ জনকল্যাণে কাজ করবে তাই নিয়ে তাদের মাথায় শুধু উদ্ভট বুদ্ধি খেলা করে। যখন প্রথম এই কাজে নামি তখন আমার আসন্ন ছবির পরিচালক বলেছিলেন, মানুষ সুযোগ পেলে আমাকে মাটিতে নামিয়ে ছাড়বে। তবে সমালোচনার ভয় আমি করি না। আশাকরি যাঁরা এর মধ্যে খুঁত খুঁজে সমালোচনায় মত্ত, তাঁরাও একদিন এই কাজে অংশ নেবেন। ২০ বছরের অভিনয় জীবনে মানুষের এত কাছাকাছি পৌঁছাতে পারিনি। এখন তো মানুষের ভালবাসায় ডুবে আছি।