কয়েক বছর আগেও দ্য বং গাইয়ের (The Bong Guy) নেপথ্যে যিনি ছিলেন, আজ তিনিই স্বমহিমায় ৮৩ হাজারেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার নিয়ে বাংলার সতীর্থ ইউটিউবারদের (YouTuber) সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন-আলু দ্য ফ্রেঞ্চ ফ্রাই-য়ের (Aalu The French Fry) অন্তরা নয়না রায় মজুমদার (Antara Naina Roy Majumder)। শুধু ইউটিউব নয়, ইনস্টাগ্রামেও তিনি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অন্তরা। নিত্য নতুন চমকে আপাতত হিট আলু দ্য ফ্রেঞ্চ ফ্রাই।
বং গাইয়ের কিরণ দত্তের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কানাঘুসো, তাঁরা কি শুধুই বন্ধু নাকি রয়েছে অন্য কোনও সম্পর্কও? প্রশ্নের জবাব দর্শকেরা একপ্রকার নিজের মতো ধরেই নিয়েছেন। তবে আসল সত্যিটা কী? কীভাবে আলু দ্য ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের যাত্রা শুরু? লেটেস্টলি বাংলাকে নিজেই জানিয়েছেন অন্তরা।
১. আপনি তো ইঞ্জিনিয়রিংয়ের স্টুডেন্ট ছিলেন, পাশাপাশি এতো সুন্দর আবৃত্তিও করেন, কখনও এগুলো পেশা করতে ইচ্ছে করেনি? নাকি অন্য কিছুই চেয়েছিলেন? Youtuber কেন?
---হ্যাঁ করেছে, ছোটো থেকে ইচ্ছে ছিল RJ হব, এমনকী জ্ঞানভানী এডুকেশনাল চ্যানেলে প্রায় দু'বছর আবৃত্তি করতাম, একটা শো তে.. কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম ওই রোজ এক টাইমে বেরিয়ে ট্রেন ধরা, ৯-৫ টার ডিউটি আমার জন্য নয়। কারো অধীনে চাকরি করা একটু অপছন্দ হয়ে উঠছিল।
আর অন্য কিছু বলতে, শুরুতে ইচ্ছে ছিল বাংলার ইউটিউবে কিছু নতুন করব, মানে যেটা বাংলায় কেউ শুরু করছে না, আর আবৃত্তি নিয়ে ভাবনা চিন্তা তো ছিলই, এখনও আছে। আমি ইউটিউবে আসার আগে অনেক আবৃত্তি সার্চ করে খুঁজে পাইনি তখন থেকেই ভাবতাম সেগুলো আমিই আপলোড করব। কিন্তু যেভাবে আপলোড করার কথা ভাবতাম তার জন্য টিম লাগবে যা আমি এখনও তৈরি করে উঠতে পারিনি, কিন্তু নিশ্চয় একদিন সেই স্বপ্ন পূর্ণ করতে পারব।
বাড়িতে বাবা, মা, আত্মীয়-স্বজনদের কী রিঅ্যাকশন আপনার এই ডিসিশন নিয়ে?
---এখনও মা সেই সরকারী চাকরি নিয়েই কথা শোনান। সিকিওর লাইফ শুধু সেখানেই এরকমটা মাথায় গেঁথে গেছে আর কী! বাপি সাপোর্ট করেন, ভরসা করেন আমার ওপর.. নিজের পছন্দের কাজে অল্প টাকা থাকলেও সুখ এটা বুঝতে পারেন।
২.আপনার তিনটি শখ এবং সবচেয়ে প্রিয় তিনজন মানুষের নাম বলুন, যাদের ছাড়া আপনি বাঁচবেন না।
--- তিনটি শখের মধ্যে প্রথমেই এখন আছে মুভি ওয়েব সিরিজ দেখা। তারপরই বলবো আবৃত্তি করা, কেউ না শুনলেও নিজেই পড়তে থাকা, নতুন কবিতা, গল্প পড়া। এছাড়া টুকটাক বাগান করা আর রান্নার শখ তো আছেই। জানি না, অনেকগুলো বলে ফেললাম বোধহয়।
আর তিনজন মানুষ যাদের ছাড়া বাঁচব না মানে যাদের ছাড়া নিজেকে ভাবতে কষ্ট হয় তাঁরা অবশ্যই মা, বাবা আর কিরণ! কিরণ কিন্তু আমার ভাইয়ের নাম! (মুচকি হেসে)
৩.Instagram বা Youtube-এ নিজের জায়গা করতে নিজেকে কতটা এফর্ট দিতে হয়েছে? অনেক মানুষ কিন্তু মনে করে পাশে কিরণ দত্ত থাকার কারণে অনেক বেশি সহজ হয়েছে। আপনার কী মতামত?
---অবশ্যই সহজ হয়েছ। কিরণ না থাকলে এত সহজে এত লোক আমাকে চিনতই এটা আমি ভাবি না। হ্যাঁ, কিরণের জন্য অনেকে সহজে আমি পর্যন্ত পৌঁছেছে কিন্তু তাঁরা আমাকে ভালোবেসেই সাথে রয়ে গেছেন এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। কিরণ কিন্তু কোনওদিনও আমার কোনো ভিডিও শেয়ার করেনি বা কোনো পোস্টে আমার ভিডিও দেখতে বলেনি কাউকে। তবুও মানুষ চিনেছে দেখেছে। কিরণের ভিডিওতে আমি প্রথম থেকেই থেকেছি। অন স্ক্রিন হোক বা অফ স্ক্রিন। The Bong Guy হয়ে না উঠলেও এভাবেই পাশে থাকতাম।
৪. এমন কোনও ঘটনা রয়েছে যেখানে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হয়েছে যার জন্য ট্রোলড্ হতে হয়েছে? বা এমন কোন ও মন্তব্য যা কষ্ট দিয়েছে? এমন পরিস্থিতিতে কী করেন? (অনেক পাবলিক ফিগারকেই সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়)
--- আমি কিন্তু খুব খারাপ ভাবে ট্রোলড কখনওই হয়নি বা মনে করিনি। মানুষ আমাকে সহজেই ভালোবেসেছে আর খুব সহজেই অনেক মানুষের সাথে আমি কানেকটেড হয়েছি। Instagram এ অনেকের সাথেই কথা হয় আমার.. সেখানে এত পজিটিভ কথাবার্তা শুনি যে নেগেটিভ গুলো খুব তুচ্ছ মনে হয়.. এখন নিজেও অনেক শক্ত হয়েছি বুঝতে শিখেছি তাই কিছু কথায় মন খারাপ করি না। ওদের দিক দিয়ে বোঝার চেষ্টা করি.. নিজের ভুল মনে হলে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করি।
৫.ভবিষ্যতে আপনাকে আমরা কীভাবে দেখতে পাব? কী পরিকল্পনা?
--- পরিকল্পনা আছে কিছু। ধীরে ধীরেই সেগুলো প্রকাশ পাবে। আমি করার পরই সেটা নিয়ে কথা বলতে চাই। আর আমায় ভবিষ্যতে ঠিক এভাবেই দেখতে পাবেন সবাই। তবে হ্যাঁ, মডেলিং বা অভিনয়ের ইচ্ছে নেই। আপাতত ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবেই রয়েছি।
৬.এবার একেবারে একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন, আপনার ফ্যানেদের প্রশ্ন-'কিরণ আর অন্তরার বিয়ে কবে হচ্ছে'?
---না, না, আমাদের যারা খুব ভালো করে চেনেন প্রতিটি মানুষ বুঝে গেছেন আমরা এখনও খুব ভালো বন্ধু, একে অপরের সাথে, পাশে ভালো খারাপ সব সিচুয়েশনে বহুদিন ধরে আছি, থাকব। সম্পর্ককে জোর করে নাম দেওয়াতে বিশ্বাসী নই একদমই, আর এখনও তো আমরা অনেকটাই ছোটো। এখন কেরিয়ার নিয়ে ভাবার সময়, সম্পর্ক নিয়ে ভাবার নয়, এভাবেই ফ্লো-তে সব চলতে থাকবে।