প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) আততায়ীর গুলিতে রক্তাক্ত হলেন। পেনসিলভিনিয়ায় নির্বাচনী জনসভার মাঝে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল এক আততায়ী।গুলি গিয়ে লাগে ট্রাম্পের বাঁ দিকের কানে। গুলির আঘাতে ট্রাম্পের কান থেকে রক্ত বের হতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে সিক্রেট সার্ভিসের কর্মীরা ট্রাম্পকে আড়াল করে মঞ্চ থেকে নিরাপদে নিয়ে যান। গুলি লাগলেও ট্রাম্পকে দমে যেতে দেখা যায়নি। বরং হাত দুটো উপরে তুলে ট্রাম্প বোঝালেন, তিনি দেশের জন্য আত্মবলিদানে প্রস্তুত। আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন জনসভায় উপস্থিত এক ব্যক্তি।
৪০০ ফুট দূর থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালানোর চেষ্টা করে সেই আততায়ী। ট্রাম্পকে যে আততায়ী গুলি করল চালায়, তাকে মেরে ফেলেছে নিরাপত্তারক্ষীরা। এমন খবর মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ট্রাম্প যেখানে জনসভায় বক্তব্য রাখছিলেন, তার কিছুটা দূরে এক বাড়ির ছাদ থেকে ট্রাম্পকে গুলি করে সেই আততায়ী শুটার। পরে তাকে পাল্টা গুলিতে মেরে ফেলা হয় বলে দাবি। হলিউড সিনেমায় এরকম দৃশ্য মাঝেমাঝেই দেখা যায়, কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষেত্রে সেটাই বাস্তবে হল।
দেখুন ভিডিয়ো
🇺🇸🚨 The shooter who tried to assassinate former President Trump was positioned on a rooftop some 400ft (125m) away from time. He was allegedly taken out by a counter sniper team of law enforcement even though this hasn’t been confirmed yet.
Photo credit and source:… pic.twitter.com/aAxWBU65D3
— Conflict Dispatch (@ConflictDISP) July 13, 2024
ঘটনার আকষ্মিকতা কিছুটা সামলে ট্রাম্পের ওপর আততায়ীর হামলার ঘটনা প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। ট্রাম্পকে প্রচারের খরচ জগানো ধনকুবের শিল্পপতি তথা টেলসা প্রধান ইলন মাস্ক ঘটনায় সবচেয়ে বেশী সরব হয়েছেন। আততায়ীর গুলিতে রক্তাক্ত হওয়ার পর ট্রাম্প-র ছবি দিয়ে মাস্ক দাবি করেছেন, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের পর ট্রাম্পের মত এত সাহসী চরিত্র এর আগে দেখা যায়নি। এদিকে, সেই জনসভায় উপস্থিত এক ট্রাম্প সমর্থক দাবি করেন, তিনি একটু আগে টের পেয়েছিলেন ট্রাম্পের ওপর হামলা হতে পারে। তাই ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের তিনি সেটা জানাতে যান। কিন্তু তাকে আগ্রহ্য করা হয় বলে দাবি। সেই ব্যক্তি এমন কথা বলেন বিবিসি-র ইন্টারভিউ-য়ে। মাস্ক এই কাণ্ডের জন্য সিক্রেট সার্ভিসের প্রধানের ইস্তফা দাবি করেছেন।
ট্রাম্পের বিবৃতি
“Most importantly, I want to extend my condolences to the family of the person at the Rally who was killed, and also to the family of another person that was badly injured”
👏👏👏👏👏👏👏👏 pic.twitter.com/eB7THfU1SB
— Rothmus 🏴 (@Rothmus) July 14, 2024
এদিকে, দলমত নির্বিশেষ ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়েছে গোটা দেশ। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন থেকে প্রাক্তন বারাক ওবামা, জর্জ বুশ সহ বিশিষ্টরা ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। তাঁর চরম প্রতিপক্ষ ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন। কিছুক্ষণ পরেই তিনি ফোনে কথা বলবেন।
দেখুন ভিডিয়ো
Trump yelling “Fight. Fight,” after getting grazed by a bullet in the ear, an inch from ending his life.
No panic. No crawling on his knees to safety. The man stands up, faces the crowd, and yells “Fight.”
Historic footage. Just incredible.
— Lomez (@L0m3z) July 13, 2024
এদিকে, হাসপাতালে ভর্তির পর ট্রাম্পের কানে সার্জারি হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে ট্রাম্প নাকি হাসপাতালে শুয়ে থাকতে চাইছেন। তিনি চান ইউএফসি-র লড়াই দেখতে স্টেডিয়ামে যেতে। এদিকে, আততায়ী হামলার পর আমেরিকা জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ট্রাম্প টাওয়ারে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ট্রাম্পের দিকে সহানুভূতির হাওয়া প্রবল হয়েচে। এক সমীক্ষা বলছেন, গোটা দেশের ৬২ শতাংশ মানুষ এখন ট্রাম্পকে দেশের প্রেসিডেন্ট হতে দেখতে চাইছেন। রাতারাতি ২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে তাঁর জনপ্রিয়তা। রিপাবলিকান সমর্থকরা, ট্রাম্পের হয়ে গলা ফাটাতে নেমে পড়েছেন।
ট্রাম্পের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসছে নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। এক দলের দাবি, ট্রাম্পকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেছেন বাইডেন। আবার এক দলের বক্তব্য, ভোটের আগে সহানুভূতির পাওয়ার চেষ্টা করতেই নিজের ভাড়া করা শ্যুটার দিতে এমন নাটক করলেন ট্রাম্প। তবে সেসব এখন তেমন বড় কিছু নয়। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। গোটা আমেরিকার দিকে এখন বিশ্বের চোখ। আমেরিকায় বন্দুকবাজের দৌরাত্ম্য নতুন নয় ঠিকই, কিন্তু এভাবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর ওপর গুলি চালিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে শোনা যায়নি।