
তোরখাম সীমান্ত দিয়ে ১১,৩৭১ জন আফগান শরণার্থীকে জোরপূর্বক আফগানিস্তানে ফেরত পাঠাল পাকিস্তান। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে, গতকাল সীমান্ত দিয়ে ৩,৬৬৯ জনেরও বেশি আফগান শরণার্থীকে নিজভূমে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। বলপূর্বক পাকিস্তান থেকে বহিষ্কার করা বেশ কয়েকজন ব্যক্তি জানিয়েছেন যে ওইসব আফগান নাগরিকদের কর্মক্ষেত্র থেকে পাকিস্তানি পুলিশ গ্রেফতার করে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠিয়েছে। এদিকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং পরিবারের সদস্যরা এই পাড়েই রয়ে গেছে। পাকিস্তান থেকে ফিরে আসা আফগান শরণার্থীরা জোরপূর্বক বহিষ্কারের সময় পাকিস্তানি পুলিশ কর্তৃক তাদের জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করার মর্মান্তিক বিবরণ বর্ণনা করেছেন, যা ইতিমধ্যেই আফগান নাগরিকদের যন্ত্রণাদায়ক যাত্রা এবং ভবিষ্যতের জীবনের কষ্টকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
আফগানিস্তানের শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক মন্ত্রক তাদের বিবৃতিতে পাকিস্তান থেকে আফগান শরণার্থীদের জোরপূর্বক বহিষ্কারের নিন্দা জানিয়েছে, এটিকে ইসলামী নীতি, মানবিক মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে ঘোষণা করেছে। এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে শরণার্থীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকেও আহ্বান জানিয়ে তাদের নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে মন্ত্রক।
পাকিস্তানের বিতর্কিত নীতি বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার সঙ্গে লক্ষ লক্ষ আফগান অভিবাসীকে বহিষ্কারের পরিকল্পনা তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।তবে পাক সরকার এই বিষয়ে মুখ বন্ধ রেখেছে। এক আধিকারিক জানান- এই বিষয়ে সরকার প্রাথমিকভাবে আফগান অভিবাসীদের স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার অথবা নির্বাসনের মুখোমুখি হওয়ার জন্য ৩১ মার্চ সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল। তবে, রমজানের শেষের দিকে ঈদুল ফিতরের ছুটির কারণে এই সময়সীমা ১০ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছিল।
রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী সংস্থা কর্তৃক প্রায় ৮ লাখ আফগান নাগরিক কার্ড (ACC) কার্ডধারক এবং ১.৪ মিলিয়ন আফগানকে প্রুফ অফ রেজিস্ট্রেশন (POR) কার্ড দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, POR কার্ডধারীদের এখনও বহিষ্কার করা হচ্ছে না, কারণ তাদের পারমিটের মেয়াদ জুনে শেষ হচ্ছে। এখন আফগান নাগরিক কার্ড (ACC) ধারক, অনিবন্ধিত ব্যক্তি এবং তালেবানদের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর যারা দেশে ফিরে এসেছেন তাদেরকে আফগানিস্থানে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।