ইসলামাবাদ, ২৭ সেপ্টেম্বর: পাকিস্তানের রক্ষণশীল সমাজের বাসিন্দা হয়েও নিজের শর্তে বাঁচতে চেয়েছিলেন ফৌজিয়া আমিন থুড়ি কান্দিল বালোচ (Qandeel Baloch)। আর তাঁর এই চাওয়ার মাশুল হিসেবে প্রাণটাই চলে গেল। দেখতে দেখতে তিন বছর হয়ে গেল পাকিস্তানের কিমকাদার্শিয়ান কান্দিল বালোচ এখন রক্তাক্ত অতীত। ঘুমের মধ্যে তাঁকে খুন করা হয়েছিল। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কান্দিলের ভাই মহম্মদ ওয়াসিমকে ঘটনার পরের দিনই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জেরায় নিজের অপরাধও কবুল করেছে সে। সাফ দাবি, পরিবারের সম্মান রক্ষার্থেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে, সেজন্য কোনও অনুতাপও নেই তার। বোনকে হত্যার দায়ে সেই ওয়াসিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল মূলতানের একটি আদালত।
তবে ওয়াসিমের (Muhammad Wasim) আইনজীবী আদালতের রায় নিয়ে প্রথমে মুখ না খুললেও পরে উচ্চআদালতে আবেদনের বিষয়টি জানান। এদিন সরকারি আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান, ইচ্ছাকৃত ভাবে কান্দিলকে খুন করা হয়েছিল। ডিএনএ পরীক্ষায় মহম্মদ ওয়াসিমের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। নিজেমুখেও অপরাধ স্বীকার করেছে সে। সাজা ঘোষণা হয়ে গিয়েছে তাই ওয়াসিমকে এবার মুলতানের সেন্ট্রাল জেলে রাখা হবে। কান্দিল বালোচ খুনে শুক্রবার মোট ৬ জনকে আদালত মুক্তি দিয়েছে। তারা হল হক নওয়াজ, আবদুল বসিত এবং মহম্মদ জাফর হুসেন, মুফতি আবদুল কাভি ও আসলাম শাহিন। আসলাম শাহিন কান্দিলেরই আর এক ভাই। এদিকে কান্দিলের খুনের ঘটনার দিন থেকেই বেপাত্তা তাঁর তৃতীয় ভাই আরিফ। পুলিশ তাকে ফেরার ঘোষণা করেছে। আরও পড়ুন-‘আমার চোখের সামনেই খুন হন সাংবাদিক জামাল খাসোগ্গি’, সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন
এবার আসি পাকিস্তানের প্রথম সারির ধর্মগুরু মুফতি আবদুল কাভির (Mufti Abdul Qavi,) কথায়। বেশ কয়েকবছর আগের এক রমজান মাসে করাচির এক নামি হোটেলে এই বিতর্কিত পাক মডেলের সঙ্গে আবদুল কাভিকে দেখা গিয়েছিল। কান্দিলের মৃত্যুর পর সেই ছবি নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়। মেয়ের মৃত্যুতে কাভির হাত রয়েছে বলে অভিযোগও করেন কান্দিলের বাবা। এই সময় কাভিকে ত্যাগ করেছিল বেশকিছু ধর্মীয় সংগঠন। এদিন আদালতে কান্দিল বালোচ খুনে কাভিকে বেকসুর খালাস করলে তাঁর অনুগামীদের মধ্যে উল্লাশ লক্ষ্য করা যায়। রীতিমতো গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে ধর্মগুরুকে সাদরে অভ্যর্থনা করেন অনুরাগীরা। বিবাহ বিচ্ছিন্না কান্দিল খোলামেলা জীবনযাপন করেত ভালবাসতেন, যৌনতা নিয়ে কোনও অনাবশ্যক ছুৎমার্গ তাঁর ছিল না। সোশ্যাল মিডিয়ায় এনিয়ে খোলাখুলি বার্তালাপও চালাতেন, আর এসবই তাঁর কাল হল, অকালে পেলেন মৃত্যুর পরোয়ানা।