
দিল্লি, ১৮ ফেব্রুয়ারি: চকোলেট চুরি করায় চরম 'শাস্তি'। মনিবের বাড়ি থেকে চকোলেট চুরির অভিযোগে ১৩ বছরের নাবালিকা পরিচারিকাকে (Domestic Help's Death ) খুন করা হল। শুনে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলেও এমনই এক ঘটনার সাক্ষী পাকিস্তান (Pakistan)। যেখানে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি শহরে এক নাবালিকা পরিচারিকা কাজের সময় চকোলেট চুরি করলে, তাকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হয়। রিপোর্টে প্রকাশ, রাওয়ালপিন্ডির একটি বাড়িতে কাজ করত ১৩ বছরের নাবালিকা। কাজের বাড়ি থেকে চকোলেট চুরি করায়, তাকে একের পর এক শাস্তির মুখে পড়তে হয়। ওই নাবালিকার উপর চরম অত্যাচার চালানো হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই কিশোরীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসার মাঝেই গত বুধবার বছর ১৩-র ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়। তবে মৃত্যুর আগে ওই কিশোরীর উপর নির্মম অত্যাচার চালানো হয় বলে খবরে প্রকাশ পায়।
রাওয়ালপিন্ডির বাসিন্দা রশিদ সফিক তার স্ত্রী সানা এবং তাদের কোরান পড়ানোর শিক্ষককে ওই নাবালিকার খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। ১৩ বছরের কিশোরীর মৃত্যুর খবরে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হতে শুরু করে। 'ইকরার বিচার চাই' বলে হ্যাশট্যাগ যোগ করে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম হয়ে উঠতে শুরু করে। ১৩ বছরের বাচ্চাকে দিয়ে কেন গৃহস্থলির কাজ বেআইনিভাবে করানো হচ্ছে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। ফলে 'জাস্টিস ফর ইকরা' স্লোগান আরও প্রবলভাবে গর্জে উঠতে শুরু করে প্রায় গোটা পাকিস্তান জুড়ে।
ইকরার মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েছেন তার বাবা। এভাবে ১৩-র ইকরা তলে যাবে, তা তাঁরা কখনও কল্পনা করতে পারেননি বলে জানান ইকরার বাবা সানা উল্লাহ। ইকরার বাবা বলেন, মাত্র ৮ বছর বয়স থেকে তাঁর মেয়ে গৃহস্থিলর কাজ করে। নিজের ইচ্ছায় সে এই পথ বেছে নেয়। কাজের জন্য তিনি কখনও তাঁর মেয়েকে জোর জবরদস্তি করেননি বলে সানা উল্লাহ জানান। তবে টাকাপয়সার টানাটানি প্রবল ছিল সংসারে। তাই কতোনও উপায়ন্তর না থাকায়, তিনি মেয়ের এই কাজে কখনও বাধা দেননি বলে জানান বাবা।
প্রসঙ্গত ইকরার সারা শরীরে একাধিক জখম ছিল মৃত্যুর আগে। বিভিন্নভাবে তাকে আঘাত করে তার কাজের বাড়ির লোকজন। শরীরে একাধিক ক্ষত নিয়ে যন্ত্রণায় ছটপট করা ইকরাকে শেষে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও, প্রাণে বাঁচানো যায়নি।