হ্যারিকেন হেলেনের দাপটে বিধ্বস্ত দক্ষিণ-পূর্ব আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে ইতিমধ্যেই অন্তত ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুনকম্বে কাউন্টিতে অন্তত ৫৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে অ্যাশেভিলও রয়েছে।

হ্যারিকেনের (Hurricane Helene) দাপট যেমন মার্কিন মুলুকে ধ্বংস লীলা চালিয়েছে, তেমনই বিপদ বাড়িয়েছে ঝড় পরবর্তী তুমুল বৃষ্টি। যার জেরে অসংখ্য নাগরিক অসহায় অবস্থায় জলমগ্ন এলাকাগুলিতে আটকে রয়েছেন। তাঁদের অনেকেরই বাড়িঘর একেবারে তছনছ হয়ে গিয়েছে।পশ্চিম উত্তর ক্যারোলিনার বাসিন্দারা গত কয়েকদিন ধরে জলের তলায় ছিল। যার ফলে পানীয় জল এবং জ্বালানী সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন লক্ষ-লক্ষ মানুষ।তাঁরা সকলেই অপেক্ষা করছেন, কতক্ষণে উদ্ধারকারী দল আসবে এবং তাঁদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাবে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড অঞ্চলে আছড়ে পড়ে হ্যারিকেন হেলেন। সেটিকে ক্যাটেগরি-৪ হ্যারিকেন হিসাবে চিহ্নিত করেছিল হাওয়া অফিস। যার হাওয়ার গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১৪০ মাইল বা ২২৫ কিলোমিটার!সেখান থেকে দ্রুত এই হ্যারিকেন পৌঁছয় জর্জিয়া। হ্যারিকেনের তাণ্ডবে ওই এলাকায় যেভাবে ঘর-বাড়ি, রাস্তা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তা দেখে জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প শনিবার বলেন, 'দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনও বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে'। উল্লেখ্য, আকাশপথে ওই এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি।

গত রবিবার থেকে হ্যারিকেন হেলেনের প্রভাবে ক্যারোলিনা এবং টেনেসির বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। যার ফলে ওই অঞ্চলের নদীগুলি দু'কূল ছাপিয়ে বইতে শুরু করে। এর ফলে নদীবাঁধগুলির উপরেও প্রবল চাপ পড়ে।লাগাতার বৃষ্টি, বন্যা ও ধ্বসের কারণে একটা সময়ের পর উত্তর ক্যারোলিনার পশ্চিমাংশ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই দুর্যোগের কারণেই ইস্ট টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি ফুটবল ম্যাচ শুরু করতে বিস্তর দেরি হয়। দুর্যোগের পর থেকেই বাসিন্দাদের এলাকায় মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎও নেই। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে রয়েছেন দুর্গতরা।