ম্যানিলা, ৭ এপ্রিল: দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনায় (COVID-19) ত্রস্ত গোটা বিশ্ব। ভারতের অবস্থা দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছে। প্রাণহানি তো নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা কাড়ছে প্রাণ। লকডাউনে কপর্দকশূন্য হয়ে অনেকে মৃত্যুকেই বেছে নিচ্ছেন। আবার কোভিড বিধি মানতে গিয়ে প্রাণ য়াচ্ছে অনেকের। তেমন ঘটনা ঘটেছে ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলার কাছে। সংক্রমণ রুখতে ফিলিপন্স জুড়ে চলছে নাইট কার্ফিউ। সন্ধ্যা ছটা বাজলেই বাসিন্দা সব কাজকর্ম ফেলে বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। কারণ কোভিড বিধি না মানলে কড়া শাস্তি পেতে হবে। এদিকে পানীয়জল ফুরিয়ে যাওয়ায় আর কোনও উপায় দেখতে না পেয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন ২৮ বছরের ফিলিপিনো ড্যারেন ম্যানগ পেনারেদোন্দো। আরও পড়ুন-WB Assembly Elections 2021: ‘নারায়ণী সেনার নাম করে রাজবংশী ভাইবোনেদের ধোঁকা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, বিজেপি কিছুই করে না’
ঘটনাটি চলতি মাসের এক তারিখের। খাবার জল কিনতে গ্রামের বাইরে বেরিয়েই রক্ষীর নজরে পড়ে যান ওই যুবক। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আটক করা হয়। কোভিড বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁকে ৩০০ বার ওঠবোস করতে বলা হয়। ১০০ বার ওঠবোসের পরেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন পেনারেদোন্দো। তবে তাতেও মুক্তি মেলেনি। টানা ৩০০ বার ওঠবোসের পর যখন তিনি বাড়ি ফিরলেন। তখন শরীরে আর জোর নেই বান্ধবী রিচিল বালস বলেন, ওঠবোসের সময় হোঁচট খেয়ে পড়েও যান পেনারেদোন্দো। শুক্রবার সকাল আটটায় তিনি যখন বাড়ি ফেরেন তখন আর পায়ে জোর নেই। তাঁরই সঙ্গে কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া আর এক যুবকের কাঁধে ভর দিয়ে বাড়িতে আসেন পেনারেদোন্দো। যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করি, পুলিশ কী মেরেছে? এর উত্তরে শুধু মৃত্যু হাসেন পেনারেদোন্দো। সারাদিন হাঁটতে পারেননি। হামাগুড়ি দিয়ে প্রায় চলেছেন। বিষয়টিতে আমিও তেমন গুরুত্ব দিইনি। কারণ তিনি বলেছিলেন, হাঁটু আর উরুতে ব্যথা হয়েছে।
পরে বাথরুমে গিয়েই তাঁর খিঁচুনি শুরু হয়। ছুটে গিয়ে দেখি যন্ত্রণা নীল হয়ে গেছে তাঁর মুখ। হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেছে। চেঁচামেচি করে প্রতিবেশীদের ডাকলে তাঁরা এসে সিপিআর দিয়ে পেনারেদোন্দোর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক করেন যদিও প্রাণে বাঁচানো গেল না। যদিও কোভিড বিধি না মানলে এমন শাস্তি দেওয়া হয়, এটা মানতে চায়নি স্থানীয় প্রশাসন।