কলকাতা, ১৪ ফেব্রুয়ারি: বিধানসভা ভোটের পর রাজ্য বিজেপিতে চলা একের পর ধাক্কা এবার বিপর্যয়ে পরিণত। কলকাতা পুরভোটে করুণ ফলের পর এবার রাজ্যের চার পুরনিগমের নির্বাচনে শোচনীয় অবস্থা হল বিজেপি-র। ঝলমলে শহর বিধাননগর, আলোর শহর চন্দননগরে খাতাই খুলতে পারল না পদ্ম শিবির। আর বিধানসভা নির্বাচনে যে দুটো জায়গায় ভাল ফল করেছিল বিজেপি, সেই শিলিগুড়ি ও আসানসোলেও একেবারে খারাপ পারফরম্যান্স করল পদ্ম শিবির। শিলিগুড়িতে বিজেপি জিতল মাত্র ৫টি ওয়ার্ডে। আর টানা দুটো লোকসভায় জেতা আসানসোলে পেল ৭টি ওয়ার্ড। যে আসানসোল, শিলিগুড়িতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পদ্মে ছয়লাপ হয়ে গিয়েছিল। মানে চার পুরনিগমের মোট ২২৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতল মাত্র ১২টি ওয়ার্ড।
কংগ্রেস, বামেরা (সিপিএম) আলাদা হয়ে লড়লেও দুটো দল মিলিয়ে জিতল ১২টি ওয়ার্ড। বিধাননগর ও শিলিগুড়িতে কংগ্রেস একটি ওয়ার্ডে জিতেছে, আর আসানসোলে জিতেছে ৩টি ওয়ার্ডে। চন্দননগরে কোনও ওয়ার্ডে জেতেনি কংগ্রেস। অন্যদিকে, বামেরা চন্দননগরে একটি, আসানসোলে দুটি, শিলিগুড়িতে চারটি ওয়ার্ডে জিতলেও বিধাননগরে খাতা খুলতে পারেনি। কলকাতা পুরভোটে ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিজেপি-তে জিতেছিল ৩টি ওয়ার্ড, বামেরা দুটি, কংগ্রেস দুটিতে।
শিলিগুড়ি ও আসানসোলে একটুর জন্য প্রধান বিরোধী দল হলেও চার পুরনিগমের ফল বিজেপিকে বড় চিন্তায় রাখবে। কারণ দক্ষিণবঙ্গে বিজেপি-র প্রধান গড় আসানসোলে খারাপ ফল। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ির মত জায়গাতেও মাত্র ৫টা ওয়ার্ডে জয় আশঙ্কা বাড়াবে পদ্ম শিবিরে। খারাপ ফলের জন্য রাজ্য বিজেপি নেতারা সন্ত্রাসের কথা বলেও দলের অন্দরের খবর একের পর এক নেতার দল ছাড়া, আর সেভাবে প্রচার করতে না পেরেই এই ভরাডুবি। বিজেপি নেতাদের কাছে আরও চিন্তার বামেদের যে ভোটটা তাদের কাছে আসত, তা এখন তৃণমূলের কাছে চলে গিয়েছে। ফলে তৃণমূল এত বড় ব্যবধানে জিতছে। তৃণমূলের সন্ত্রাস রুখতে না পারার কারণে সাংগঠনিক ব্যর্থতাকেই দুষছেন রাজ্য বিজেপির একাংশ।