কলকাতা, ২১ মার্চ: দমদম সেন্ট্রাল জেলে (Dum Dum Central Jail) ধুন্ধুমার। বিচারাধীন বন্দী ও জেলরক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষ। গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বন্দীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। আহত কমপক্ষে পাঁচজন। আজ সকাল থেকেই জেলে গণ্ডগোল শুরু হয়। জেলের ভিতরে আগুন লাগানোর পাশাপাশি মই এনে পাঁচিল টপকানোর চেষ্টা করেছেন কোনও কোনও বন্দী। আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী, জেলের যে অংশের দখল নিয়েছেন বন্দীরা, সেখানে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয় বাইরে থেকে। শুধু তাই নয়, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, পুলিশকে শূন্যে গুলি চালানোর নির্দেশ জারি করা হয়। বন্দীদের তরফে গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে জেলরক্ষীদের বিরুদ্ধে।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘এক জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি আমরা। তবে গুলিবিদ্ধ হয়েই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে কি না বলতে পারছি না। যতক্ষণ না ভিতরে ঢুকে জেলের দখল নিতে পারছি, ততক্ষণ পর্যন্ত এ ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।’’ যদিও বন্দীদের পরিবার পরিজনদের দাবি, পুলিশ এবং জেলরক্ষীদের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ওই বন্দীর। আরও পড়ুন: West Bengal: ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে রাজ্যের সব রেস্তরাঁ, বার; বন্ধ কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কফি হাউস
জেলবন্দিরা যাতে করোনাভাইরাসে (Coronavirus) আক্রান্ত হয়ে না পড়েন, সে জন্য সাময়িক ভাবে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাঁদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য কারা দফতর। শুক্রবারের ওই সিদ্ধান্ত ঘিরেই এ দিন সকালে গন্ডগোল শুরু হয়।পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধের প্রতিবাদে এ দিন সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। জেল সুপার নিজে বিক্ষোভ থামাতে গেলে, তাঁর সামনে একাধিক দাবি নিয়ে হাজির হন বন্দিরা। বলা হয়, সাজাপ্রাপ্ত বন্দীদের মতো তাঁদেরও প্যারোলে ছাড়তে হবে। এই নিয়েই জেল কর্তৃপক্ষ এবং বন্দীদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই তা সংঘর্ষের আকার নেয়। অভিযোগ, ওই সংঘর্ষ চলাকালীন জেল পুলিশ এবং বাইরে থেকে র্যাফ এসে ওয়ার্ডের মধ্যেই বিচারাধীন বন্দীদের উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। তার পাল্টা ওয়ার্ডে ব্যাপক ভাঙচুর চালান বিক্ষুব্ধ বন্দিরা। সেইসময় বিক্ষুব্ধ বিচারাধীন বন্দীরা ওয়ার্ডের গেট ভেঙে বাইরে বেরনোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তাঁরা দা এবং কুড়ুলের মতো অস্ত্রও হাতে তুলে নিয়েছেন বলে জেলকর্তাদের দাবি। শুধু তাই নয়, অবিযোগ, জেলের ওয়ার্ডে আগুনও ধরিয়ে দিয়েছেন বন্দীরা। ঘটনাস্থলে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন পৌঁছেছে।
খবর পেয়ে পৌঁছন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। অন্য দিকে বন্দীদের পরিবারের দাবি, জেলরক্ষীরা জেলের ভিতরে বন্দীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, "জেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ছিল না। বন্দীদের মধ্যে কেউ কেউ তা করার চেষ্টা করেছে। তদন্ত হলে সব ধরা পড়বে।"