কলকাতা, ১৮ জানুয়ারি: রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে যেন শুম্ভ নিশুম্ভের লড়াই শুরু হয়েছে। গত ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সভার খবর পেয়ে পরের দিন সেখানে সভা করার কথা বলেছিলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া দাপুটে নেতে শুভেন্দু অধিকারী। তবে অখিল গিরি কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় নন্দীগ্রাম দিবসে সেখানে যাননি মুখ্যমন্ত্রী। তাই পরের দিনের নির্ধারিত সভাও বাতিল করে দেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও তিনি বলেছিলেন, দিদিমণি যেখানেই সভা করবেন। ঠিক পরের দিন সেখানে সভা করে তাঁর প্রত্যেকটি কথার হিসেবে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেবেন এই নব্য বিজেপি নেতা। বলাবাহুল্য, সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এসে গেছে। আজ ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের বাসিন্দাদের মুখোমুখি হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী কাল মঙ্গলবার পাশের খেজুরির বিদ্যাপীঠ মাঠে মমতাকে বেগ দিতে হাজির হবেন একদা তাঁর শিষ্য শুভেন্দু অধিকারী। আরও পড়ুন-Amit Shah Will Come to Bengal: আসন্ন বিধানসভা ভোট; ৩০ বা ৩১ জানুয়ারি রাজ্যে ফের আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জানালেন দিলীপ ঘোষ
এদিকে সোমবার যখন শুভেন্দুর গড়ে তাঁরই বিরোধিতায় মুখর হবেন তৃণমূল নেত্রী। ঠিক তখন দক্ষিণ কলকাতায় টালিগঞ্জ মেট্রো থেকে রাসবিহারীর মোড় পর্যন্ত মমতা বিরোধিতায় মিছিল করবেন শুভেন্দু। দল বদলের পরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, দক্ষিণ কলকাতার বিশেষ কিছু নেতা মন্ত্রীরাই দলের সমস্ত প্রসাদ খেয়ে বসে আচেন। তাঁরাই সবরকম সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন। এবার মমতার সেই গড়েই তিনি ফাটল ধরাতে চান। খড়দহের সবাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে বলেছিলেন, বাবুসোনা এবার হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট, হরিশ মুখার্জি স্ট্রিটেও পদ্মফোটাবো। তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে বিবেক জাগ্রত হবে। এমনিতে গত লোকসভা ভোটে নিজের গড়েও বেশ কয়েক জায়গায় বিজেপির ভোট সংখ্যার নিরিখে পিছিয়ে পড়েছিল তৃণমূল। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সেই সংখ্যাকে হাতিয়ার করে ময়দানে ঝাঁপাতে চলেছে বঙ্গবিজেপি। মমতাকে রুখতে শুভেন্দুকেই দাবার বোরে হিসেবে লড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাগ মেটাতে একেবারে লোহা গরম গরম থাকতে থাকতেই পেটাতে তৎপর শুভেন্দু। বিজেপিও এই সুযোগ হাচছাড়া করতে নারাজ।
এদিকে শুভেন্দুর দলবদলের পরেই বাবা শিশির অধিকারীর ক্ষমতা খর্ব করেছে তৃণমূল। সাংসদ সৌম্যেন্দু অধিকারীকেও বিশেষ পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না। আজ মমতার সভায় দুজনের কেউই আমন্ত্রিত নন। এমনিতে কয়েকদিন আগেই শিশিরবাবু দল বিরোধী মন্তব্য করেছেন। এই সভায় এসে তেমন কোনও কথা বললে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া মুশকিল হতে পারে। তাই যতক্ষণ সাংসদ পুত্রকে নিয়ে শিশির অধিকারী দলে রয়েছেন ততক্ষণ তাঁদের এড়িয়ে চলার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে।