রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর (Photo:ANI)

কলকাতা, ১০ অক্টোবর: মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) জিয়াগঞ্জে RSS কর্মীসহ একই পরিবারের তিনজনকে খুনের ঘটনায় প্রতিত্রিয়া দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর (Jagdeep Dhankhar)। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমরা যে পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করছি, এই ঘটনা তারই একটি গুরুতর প্রতিফলন।" খুনের ঘটনায় তিনি প্রশাসনের থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত রাজ্য প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি এবং আপডেট চেয়েছি।"

বিজয়া দশমীতে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad district) জিয়াগঞ্জে বাড়ির ভিতরে ঢুকে স্কুল শিক্ষক, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও ছেলেকে খুন করার অভিযোগ অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। মৃত স্কুল শিক্ষকের নাম বন্ধুপ্রকাশ পাল (৩৫), স্ত্রী বিউটি মণ্ডল পাল (৩০) ও তাঁদের বছর আটের ছেলে বন্ধুঅঙ্গন পাল। জিয়াগঞ্জ থানার কানাইগঞ্জ লেবুবাগান এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। দশমীর দিন বেলা ১২টা নাগাদ তিনজনের ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয় বাড়ির ভিতর থেকে। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এদিকে বন্ধুপ্রকাশ পালকে তাদের সংগঠনের সদস্য বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) পশ্চিমবঙ্গের সেক্রেটারি জিষ্ণু বসু (Jishnu Basu)। আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সময় এসেছে কি না বিবেচনা করুক কেন্দ্র: RSS

এরপরই আজ খুনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তীব্র সমালোচনা করে রাষ্ট্রীয় স্বংয়সেবক সংঘ (RSS)। পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) রাষ্ট্রপতি শাসন (President Rule) জারি করার সময় এসেছে কি না তাও কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে তারা জানিয়েছে। RSS নেতা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (VHP) আন্তর্জাতিক কার্যকরী সভাপতি অলোক কুমার (Alok Kumar) বলেন, "এটা দেখা যাচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন নেই। শাসকদল তৃণমূল বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের উপরে অত্যাচার করছে। ভাঙচুর, লুট, ধর্ষণ, খুন করছে।" তিনি আরও বলেন, "আমি আবাক হচ্ছি। কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনা করা উচিত যে ভারতের সংবিধান মেনে পশ্চিমবঙ্গে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারবে কি না। না হলে রাষ্ট্রপতি শাসন লাগুর সময় এসেছে কি না তার বিষয়ে বিবেচনা করুক তারা।" অলোক কুমারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা কেরালার (Kerela) চেয়েও খারাপ। এখনও পর্যন্ত কেরালায় সবচেয়ে বেশি RSS কর্মী খুন হয়েছে।

অলোক কুমার বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা কোনও বিশ্ববিদ্য়ালয়ে গেলে ভাঙচুর চালানো হয়। তাই আমি এটাই বলছি যে কেন্দ্রীয় সরকারের ভেবে দেখা উচিত সময় এসেছে কি না এ নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া বা হস্তক্ষেপ করার।" আগামী নির্বাচনে রাজ্যের মানুষ তৃণমূলকে উপযুক্ত জবাব দেবে বলেও তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, "এটা ভয়ানক হত্যা। ৩৫ বছরের শিক্ষক, তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।" মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্দেশ্যে তাঁর প্রশ্ন, "স্ত্রী আর ছেলেকে মারার কী কারণ আছে?"