কলকাতা, ১৮ সেপ্টেম্বর: বাংলার রাজনীতিতে সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে বড় দলবদলের খবর। বিজেপি থেকে আর কোনও বিধায়ক নয়, এবার একেবার সাংসদ, তাও আবার নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে (TMC)। মাস কয়েক আগে যিনি ছিলেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম প্রধান মুখ, রাজ্যের শাসক দলের দীর্ঘদিনের এক নম্বর সমালোচক সেই বাবুল সুপ্রিয় যোগ দিলেন তৃণমূলে। মোদী সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল এবার দিদির মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পান নাকি অন্য কোনও বড় পদ পান সেটাই দেখার।
তৃণমূলের পতাকা গায়ে বাবুল দলের শীর্ষ নেতা অভিষেক ব্যানার্জি (Abhishek Banerjee), আর ডেরেক ও ব্রায়েনে (Derek O'Brien)-র পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুললেন। এই ছবিটা বাংলার দলবদলের তো বটেই, ভারতের রাজনীতির দলবদলের ইতিহাসেও দীর্ঘদিন থেকে যাবে। আরও পড়ুন: তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন বাবুল সুপ্রিয়
দেখুন তৃণমূলের টুইট
Today, in the presence of National General Secretary @abhishekaitc and RS MP @derekobrienmp, former Union Minister and sitting MP @SuPriyoBabul joined the Trinamool family.
We take this opportunity to extend a very warm welcome to him! pic.twitter.com/6OEeEz5OGj
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) September 18, 2021
মোদী মন্ত্রিসভার কোনও প্রাক্তন সদস্য এর আগে বিজেপি ছেড়ে অন্য কোনও দলে যোগ দেননি। ক মাসে আগে বিধানসভা ভোটে বাবুল যখন টালিগঞ্জ কেন্দ্রে তৃণমূলের অরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন প্রচারে দিদির দলের বিরুদ্ধে প্রবল সরব হয়েছিলেন। কিন্তু ভোটে বেশ বড় ব্যবধানে হেরেছিলেন বাবুল। আরও পড়ুন: মনে ভক্তি, কোভিডে নজর, ডবল টিকার সার্টিফিকেট দেখিয়েই আজ থেকে শুরু হল চারধাম যাত্রা
ভোটে হারের পিছনে গণনায় তৃণমূলের মেশিনারিকেও নেপথ্যে দায়ি করেছিলেন। ২০১৪ ও ২০১৯ পরপর দুটি লোকসভা ভোটে আসানসোল থেকে বিজেপি-র টিকিটে জয়ী সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে রাজ্যে বিজেপির জয়ের ভিত বলা যায়। কারণ তিনিই এখনও পর্যন্ত রাজ্যে বিজেপি-র দু বারের সাংসদ ছিলেন। বাবুলের বিদায়ে রাজ্য বিজেপি আরও দুর্বল হয়ে পড়ল। রাজ্য বিজেপি-র স্বচ্ছ, বাঙালি, বিদ্বজ্জন মুখের অভাবের মাঝে বাবুল ছিলেন উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। সেটাও হাতছাড়া হল বিজেপির।
বাবুলের তৃণমূলের যোগদানের সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলে আসানসোলের সাংসদকে বাদ দেওয়ায়। ২০১৪ লোকসভা ভোটে দার্জিলিং বাদ দিলে বাংলা থেকে বাবুল সুপ্রিয়ই ছিলেন বিজেপির একমাত্র জয়ী প্রার্থী। বাবুলকে প্রথমবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেওয়া হয়। তবে সেটা ছিল প্রতিমন্ত্রী। এরপর তাঁকে কখন পূর্ণমন্ত্রী করা তো দূরে থাক, বাদ পড়তে হয়। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বাবুল। রাজনীতি থেকে বিরতি নেওয়ার কথাও বলেছিলেন 'কহো না পেয়ার হ্যায়'-র গায়ক। তখন থেকেই একটা জল্পনা ছিল, ঝালমুড়ি রাজনীতিতে একবার দিদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতায় আসা বাবুল হয়তো তৃণমূলে আসতে পারেন। তবে রাজনীতি ছাড়ার কথা বলার পরও ফেসবুকে তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে লিখেছিলেন একটি পোস্টে। শেষ অবধি তৃণমূলেই এলেন বাবুল।