Representational Image (Photo Credit: File Photo)

আচমকাই বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর মনমরা হয়ে পড়েছিলেন নাবালিকা মেয়ে। এদিকে আবার তাঁর ভাইও রয়েছে। ফলে কি করবে আর কি করবে না, সেটাই বুঝতে পারছিল না একাদশ শ্রেণির দেবশ্রী রানা। আর সেই কারণেই নিয়ে ফেলল চরম সিদ্ধান্ত। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হল কিশোরী। ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে তমলুকের হরিদাসপুর এলাকায়। ইতিমধ্যে দেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ।

ছোট থেকেই দুর্গাপুরে থাকত নাবালিকা

পরিবারসূত্রে খবর, দেবশ্রীর বাবা দুলাল রানা জন্মসূত্রে তমলুকের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই দুর্গাপুরের টাউনশিপে ফ্ল্যাট কিনে থাকতেন। পেশায় তিনি একজন ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন। জানা যাচ্ছে, বছর দেড়েক আগে দেবশ্রীর মা জ্যোৎস্না রানা ব্রেন স্ট্রোক হয়ে মারা যান। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে মৃত্যু হয় দুলালবাবুর। মাসছয়েক আগেই কিডনিতে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

বাবা-মায়ের মৃত্যুতে মানসিক অবসাদে পড়ে নাবালিকা

একের পর এক ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল দেবশ্রী ও তাঁর ভাই। ছোট দুই ছেলেমেয়েকে একা রাখতে চায়নি পরিবারের বাকি সদস্যরা। সেই কারণে দুর্গাপুর থেকে তমলুকের হরিরাজপুরে পিসেমশাইয়ের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় দুজনকে। পিসেমশাইয়েরও স্ত্রী বছর ১৫ আগে মৃত্যু হয়। এবং তাঁর ছেলে দেবায়ন্ত সামন্ত কর্মসূত্রে বাইরে থাকতেন। ফলে পিসেমশাই দুই নাবালক-নাবলিকার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কিন্তু দেবশ্রী কোনওভাবেই বাবা-মায়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারছিল না।

দেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়

সেই কারণে মঙ্গলবার সন্ধে ৭টা নাগাদ শোয়ার ঘরে সিলিং ফ্যানে ওড়না লাগিয়ে ঝুলে পড়ে নাবালিকার। পরিবারের সদস্যদের তাঁকে ওই অবস্থায় দেখতে পেয়েই তড়িঘড়ি তাম্রলিপ্ত মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। বুধবার বিকেলে দেহটি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।