কলকাতা, ১২ সেপ্টেম্বর: জুনিয়র ডাক্তারদের (Junior Doctors) চিঠি পাওয়ার পর মুখ্যসচিব (Chief Secretary) লিখেছিলেন, খোলা মনে বৈঠক হোক। কোনও শর্ত মেনে নয়। বৃহস্পতিবার ২ ঘণ্টা ধরে নবান্নে অপেক্ষার পর এমনই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বৈঠক যখন হবে, তখন পুরোটা রেকর্ড হবে। স্বচ্ছতা মেনেই সব বৈঠক হবে বলে জুনিয়র ডাক্তারদের জানানো হয়। জুনিয়র ডাক্তাররা চাইলে ভিডিয়ো রেকর্ডিংও শেয়ার করা হত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে। যখন কোনও মামলা বিচারাধীন, সেখানে মিডিয়া ট্রায়াল সংবাদমাধ্যম করতে পারে না। মামলা বিচারাধীন। ফলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই ভিডিয়ো রেকর্ডিং শেয়ার করা হত বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। প্রয়োজনে আদালতের ট্রায়ালেও এই ভিডিয়ো রেকর্ডিং দেওয়া যেত বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জুনিয়র ডাক্তারদের ৪.৪৫ মিনিটে নবান্নে আসার কথা বলা হয়।সেখানেও তাঁদের দেরি হয়। তাতেও তাঁরা কিছু মনে করেননি বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। গত ৩ দিন ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের জন্য অপেক্ষা করছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। পাশাপাশি নির্যাতিতা চিকিৎসক যাতে বিচার পান, সেটা রাজ্য সরকারও চায় বলে সাংবাদিক সম্মেলন থেকে জানান মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনেই বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং করা যায় না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক যদি ফলপ্রসূ হত, তাহলে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলতে পারতেন বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানান আজ। খোলামেলা আলোচনায় আমার ছোট্ট ছোট্ট ভাইবোনেরা ডাক্তারদের স্বার্থে, রোগীদের স্বার্থে এই আলোচনা করতে পারতেন। আমরা বড়, তাই ছোটদের ক্ষমা করে দেওয়ার সৌজন্য আমরা অবলম্বন করব বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ১৫ জনের জায়গায় জুনিয়র চিকিৎসকরা ৩৪ জন এসেছিলেন। সরকারের তরফে সবটা মেনে নেওয়া হয় তাও তাঁরা সভাঘরে প্রেবশ করলেন না। কেন নবান্ন সভাঘরে প্রবেশ করলেন না, সেটা সংবাদমাধ্যমের সামনে জানাতে পারতেন বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
ডাক্তারদের আমরা মনে করি ভগবান। কিন্তু ৭ লক্ষ মানুষ পরিষেবা পাননি। কত মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন, সেই তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা চলছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। 'আমি ক্ষমা চাইছি বাংলার মানুষের কাছে। বাংলার মানুষও চেয়েছিলেন, আজ হয়ত সমস্যার সমাধান হবে বলে। নবান্নের গেট থেকে যাঁরা ফিরে গেলেন, তাঁদের আবার ক্ষমা করে দিলাম। আবারও যদি তাঁরা আলোচনায় বসতে চান, তাহলেও আলোচনা হবে। আমি অপেক্ষা করছি বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। উই ওয়ান্টি জাস্টিস ফর তিলোত্তমা' বলেও মন্তব্য করতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে।
শেষে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'অনেকগুলি গ্রুপ এসেছিলেন যাঁরা আলোচনা করতে চাইছিলেন। কিন্তু ২,৩ জন পিছন থেকে নির্দেশ দিচ্ছিলেন আলোচনায় না বসতে। আমার সবটা দেখেছি।' কাদের কাছ থেকে নির্দেশ আসছিল বলে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। 'আমাকে, আমাদের সরকারকে অনেক অপমান করা হয়েছে। কুৎসা করা হয়েছে। অপপ্রচার করা হয়েছে। মানুষ এসেছিলেন তিলোত্তমার বিচার চাইতে। এখন মানুষ বুঝতে পারছেন ওরা চেয়ার চাইছে ' বলে বিরোধীদের কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।