কালীপুজোর দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে উত্তর কলকাতা জোড়াবাগান (Jorabagan) এলাকায় একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়ছিল এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মৃতদেহ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছিল এলআইসি এজেন্ট পায়রাবাবু ওরফে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর ডাকাতরা হামলা চালিয়েছিল। কারণ ব্যক্তির শরীর থেকে সোনার আংটি, হার উধাও ছিল। এমনকী টাকা পয়সা এবং মোবাইল ছিল না বলেও জানা যায়। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তদন্তের গভীরে গিয়ে জানা যায় পরকীয়ার জেরেই খুন হয়েছেন বছর ৫৭-এর ওই ব্যক্তি। এবং এই ঘটনায় জড়িত এক নাবালক। অভিযুক্তকে নদীয়ার চাপড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশসূত্রে জানা যাচ্ছে, এলআইসি সূত্রে নাবালকের মায়ের সঙ্গে পরিচয় হয় অভিজিতের । সেই কর্মসূত্র থেকেই সম্পর্ক গভীর হয়। তারপরে প্রায়শই ওই মহিলার বাড়ি যেতেন পায়রাবাবু। এবং মহিলাও নাকি বেশ কয়েকবার কলকাতায় এসেছেন। তবে এই সম্পর্ক নিয়ে বেশ ভালোই আপত্তি ছিল মহিলার ছেলের। এমনকী এই নিয়ে মায়ের সঙ্গে বচসাও জড়িয়েছিল ছেলেটি। কিন্তু মহিলা একবারের জন্যও আন্দাজ করতে পারেননি যে এমনও ঘটতে পারে। কালীপুজোর আগের দিন রাতে কলকাতায় এসে জোড়াবাগানে অভিজিতের বাড়ি খোঁজ করে সে। লুকিয়ে লুকিয়ে সেই বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায় অভিযুক্ত।
তদন্তে উঠে আসছে, অভিজিতের দেহে মোট ১১ বার ছুরির কোপ মারে নাবালকটি। এরমধ্যে ৯ বার মাথায় আঘাত করা হয় এবং দুইবার হাতে। হাতে হামলা থেকে বাঁচার চেষ্টা করার সময় ক্ষত হয়। অভিজিতের মৃত্যুকে ডাকাতি হিসেবে প্রমাণ করার জন্য কয়েকটি জিনিসপত্র চুরি করে সে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল মোবাইল ফোন। শুক্রবার এই মোবাইলের টাওয়ার দেখে চাপড়ায় গিয়ে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত নাবালককে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে অভিজিতের দিদি চা দিতে গিয়ে প্রথম দেহটি দেখতে পান। অবিবাহিত ওই ব্যক্তি পাঁচতলা বাড়ির ওপরে থাকতেন। প্রতিদিন নিয়মমাফিক তাঁকে চা দিতে আসতেন তাঁর দিদি। এদিন চা দিতে এসে সামনের দরজা বন্ধ দেখে পেছনের দরজায় যেতেই রক্তাক্ত দেহ দেখতে পায় মৃতার দিদি। তারপরেই ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।