কলকাতা, ২১ ডিসেম্বর: এমনিতেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বাংলাকে গেরুয়াকরণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। তায় শুভেন্দু অধিকারীর মতো দাপুটে নেতাকে দলে পেয়ে বঙ্গ বিজেপির এখন সোনায় সোহাগা। গতকালই অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে রোড শো করার পর অন্ডাল বিমানবন্দরে উড়ে গিয়েছেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ। সেখানে প্রায় পৌনে দুঘণ্টা দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলায় ভোটের রণকৌশল কী ঠিক হল তানিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে বঙ্গবিজেপি। দিলীপ ঘোষ তো বলেই দিলেন, অমিত শাহর এদিনের পরামর্শ সরকারে আসার পর জানাবেন। ভোটে আগামী বছরে, কিন্তু শুভেন্দু ঝড়ে এবছরই যেন শাসকদল একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তবে ভাঙলেও মচকাতে নারাজ তৃণমূলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)।
রবিবারের অমিত শাহর গ্র্যান্ড সমাবেশের পর সোমবার টুইটে তোপ দাগলেন পিকে। বললেন, “গেরুয়া শিবিরের উত্থানে যতই মিডিয়ার একাংশের হাত থাকুক না কেন পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ডবল ডিজিট ক্রস করতে বিজেপির কালঘাম ছুটে যাবে। অনুগ্রহ করে টুইটটি সেভ করুন। বিজেপি যদি এর থেকে ভাল কিছু করতে পারে তবে আমি আমার জায়গা ছেড়ে দেব।” ১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে শাসক তৃণমূলের প্রধান বিরোধীদল হয়ে উঠেছে বিজেপি। তারপর থেকেই ঘর গোছানোর কাজ অব্যাহত রয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে মুকুল রায়, অর্জুন সিং, সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরার মতো তৃণমূল নেতা তথা সাংসদদের দলবদলে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। করোনাকালে সেই প্রক্রিয়ায় খানিকটা ব্যাঘাত ঘটলেও ফের সাংসদ মহুয়া মিত্রের আলটপকা মন্তব্যে নতুন করে সুয়োগ এসে যায় বঙ্গ বিজেপির কাছে। আরও পড়ুন-Winter In West Bengal: মরশুমের শীতলতম দিনে কম্পমান কলকাতা, ৫ জেলায় শৈত্যপ্রবাহের আভাস
For all the hype AMPLIFIED by a section of supportive media, in reality BJP will struggle to CROSS DOUBLE DIGITS in #WestBengal
PS: Please save this tweet and if BJP does any better I must quit this space!
— Prashant Kishor (@PrashantKishor) December 21, 2020
আগেই বলা হচ্ছিল, বাংলায় আইনের শাসন নেই। পুলিশ প্রশাসন রাজ্য সরকারের দলদাসে পরিণত হয়েছে। এরপর সপ্তাহ দুয়েক আগে ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় রাজ্যের মুখ পুড়েছে। কনভয়ের দায়িত্বে থাকা তিন আইপিএস-কে তলব করেও দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। মাঝে বাদ সেধেছে নবান্ন। এতবড় নির্দেশ অমান্যের শাস্তি স্বরূপ কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে তিন পুলিশকর্তার বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা যে বরদাস্ত করবেন না, ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন। এই গোলযোগের মধ্যে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরের দল ভারী করেছেন তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায় নাকি ১০ জন তৃণমূল নেতা দল ছাড়বেন। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের এক নেতা ঘাসফুল ত্যাগ করেছেন। পুরুলিয়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান রয়েছেন দলবদলের তালিকায়। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, শীলভদ্রবাবু। তবে দলত্যাগ করেও ফের দিদির কাছে ক্ষমা চাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন আসানসোলের জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তাঁর এই প্রত্যাবর্তনের নেপথ্যে যে বঙ্গবিজেপির অনীহা প্রকাশ্যে এসেছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।