কলকাতা, ১৯ এপ্রিল: হাসপাতাল থেকে ফেরানো হল রেড জোন হাওড়ার প্রসূতিকে। প্রসবযন্ত্রনা নিয়ে NRS র প্রসূতি বিভাগে এলে তাঁকে ঢুকতেই দেওয়া হল না। হাওড়া রেড জোন (Howrah Red Zone) হওয়ায় তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ মহিলার।যার ফলে বাধ্য হয়েই ফিরে যান ওই মহিলা। সেখানেই তিনি শেষপর্যন্ত সন্তান প্রসব করলে মৃত্যু হয় ওই সদ্যোজাতের।
ওই প্রসূতি জি ২৪ ঘণ্টাকে জানিয়েছেন, পরিবারের সদস্যরা হাতজোড় করে দ্রুত ভর্তি করার অনুরোধ জানান জুনিয়র ডাক্তারদের। প্রথমে তারা বলেন, এইমুহূর্তে এখানে ভর্তি হবে না। আপনারা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যান। গাইনি ইমারজেন্সিতে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের কেউ কেউ সাদা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললেন, "এখানে লিখে সই করে দিন আপনাদের রোগী এবং তার যে সন্তান জন্মাবে তাদের করোনা হলে হাসপাতাল দায়ি নয়।" আরও পড়ুন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শীর্ষ পুলিশ কর্তার মৃত্যু
এখানেই শেষ নয়। তাঁরা আরও বললেন, "বাচ্চা জন্মানোর পর ১৪ দিন কেউ আপনার আসতে পারবেন না। তার মুখও দেখতে পারবেন না। একইসঙ্গে আমরা এই রোগীকে আইসোলেশন রেখে দেবো। কারণ আপনারা হাওড়া থেকে এসেছেন। ওই আইসোলেশনে কিন্তু কোন চিকিৎসা হয় না, মাথায় রাখবেন। "এভাবেই চলতে থাকে হুমকি।’
সুপারের অফিসে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই প্রসূতি। তিনি জানান, "আমার পেটের সন্তানকে বাঁচানোর আর্জি জানালাম। সিনিয়ররা বললেও একদল চিকিৎসক কোনোভাবে ভর্তি হতেই দিলেন না। কারণ হাওড়া রেড জোন। আমরা রিস্ক নেবো না।" সুপারের অফিসের দ্বারস্থ হন ওই পরিবার। ভর্তি শেষমেষ সম্ভব হয়নি। প্রসব যন্ত্রণা নিয়েই বিভাগের দরজা থাকে ফিরে যান হাওড়ার বাসিন্দা। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ এমন অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী রইল এন আর এস মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
এনআরএস-র অধ্যক্ষ শৈবাল মুখার্জী বলেন, "এমন ঘটনার কথা শুনলাম। অভিযোগ পেয়েছি। আমি প্রসূতি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। কারা আজকে সন্ধ্যায় দায়িত্বে ছিলেন তাদের নামের তালিকা চেয়েছি । কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনভাবে কোন রোগীকে কোন প্রসূতিকে ফেরানো যায় না।" এদিকে, প্রসূতি ফিরে যাওয়ার পর তাঁর হাওড়ার বাড়িতেই তিনি সন্তান প্রসব করেন কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই সন্তানের মৃত্যু হয়।