কলকাতা, ১৪ সেপ্টেম্বর: নিট পরীক্ষা (NEET 2020) দিতে বিহার (Bihar Student) থেকে কলকাতার (Kolkata) উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ট্রাভেল করার পর কোনওমতে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছন তিনি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের থেকে ১০ মিনিট দেরিতে পৌঁছন তিনি। তাতেই ঘটল বিপত্তি! পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে তাঁকে দিতে দেওয়া হল না পরীক্ষা। পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সন্তোষ কুমার যাদব। বিহারের দ্বারভাঙার (Darbhanga) বাসিন্দা তিনি। সল্টলেকে (Salt Lake City) সন্তোষের পরীক্ষার সিট পড়ে। ৭০০ কিলোমিটার দূর থেকে নির্দিষ্ট দিনে পরীক্ষা দিতে আসতে পারলেও ১০ মিনিট দেরি হওয়ার কারণে ব্যর্থ হলেন তিনি পরীক্ষা দিতে।
আনলক পর্বের মধ্যেই চলছে নিট পরীক্ষা। দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে যাচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টার যাত্রা, সেটা কারওর কারওর ক্ষেত্রে গিয়ে ঠেকছে ১ দিন কিংবা ২ দিনও। চরম অপ্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই কেউ কেউ প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই পৌঁছচ্ছেন পরীক্ষাহলে। এভাবেই সন্তোষও শনিবার সকাল ৮টা নাগাদ দ্বারভাঙা থেকে রওনা দিয়েছিলেন কলকাতা পৌঁছনোর জন্য। সন্তোষ বলেন, "মজফরপুর যাওয়ার জন্য সকাল ৮ টায় দ্বারভাঙা থেকে রওনা দিয়েছিলাম। মজফপুর পৌঁছে সেখান থেকে বাস নিয়ে পটনা যাচ্ছিলাম। কিন্তু রাস্তায় ট্রাফিক থাকার জন্য ৬ ঘণ্টা দেরি হয় পটনা পৌঁছতে। রাত ৯টায় পটনা থেকে আর একটা বাসে চেপে শিয়ালদাহ স্টেশনে আসি। সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছই।"
পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল দুপুর ২টোর সময়। কিন্তু সন্তোষ গিয়ে পৌঁছন ১.৪০ মিনিটে। পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার শেষ সময় ছিল দেড়টা। এদিকে, নিট পরীক্ষাকেন্দ্রে ৩ ঘণ্টা আগে পৌঁছনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কারণ করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে নির্দিষ্ট সিক্যুরিটি এবং স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরই পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল পরীক্ষার্থীদের।
সন্তোষ আরও বলেন, "আমি কর্তৃপক্ষের কাছে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে চাওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করি। কিন্তু তারা শুধু একটাই কথা বলছিল যে আমি অনেক দেরিতে এসেছি, তাই ঢুকতে দেওয়া যাবে না... আমার একটা বছর নষ্ট হল।" যদিও এই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে তুলোধনা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। নিট পরীক্ষার্থীদের জন্য যথাযথ যাতায়াতের ব্যবস্থা কেন করা হয়নি, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দিলীপবাবু। হিন্দুস্থান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষ বলেন, "জেইই এবং নিট পরীক্ষার্থীদের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল যে, পরীক্ষার্থীদের যাতায়াত এবং থাকার জন্য যেন কোনও সমস্যা না হয়। কিন্তু নিট এবং জেইই- দু'ক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গে সমস্যার সম্মুখীন হয় পরীক্ষার্থীরা। মুখ্যমন্ত্রী নিজে দাবি করেছিলেন ৭০ শতাংশ পরীক্ষার্থী জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে পারেনি। এই সরকার একেবারেই পরীক্ষার্থীদের কথা ভাবেনা।" যদিও নিট পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে গত শনিবার পূর্ণাঙ্গ লকডাউন প্রত্যাহার করার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ মেট্রো পরিষেবাও চালু করা হয়।