নির্বাচন কমিশন। ফাইল ছবি। (Photo Credits: PTI)

কলকাতা, ১৩ জুলাই: সময় দ্রুত কমে আসছে। তৃতীয় ঢেউয়ের ছোবল কবে আসবে কেউ জানে না। এদিকে, নভেম্বরের মধ্যেই ভোটে জিতে এসে নিজের সিংহাসন বাঁচাতে হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee) কে। উত্তরাখণ্ডে করোনার মাঝে ভোট না হওয়ার কারণে পদত্যাগ করছেন মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিং রাওয়াত। তাঁকেও দিদির মতই উপনির্বাচনে জিতে আসতে হত। এসব দিকের কথা মাথায় রেখে রাজ্যে দ্রুত উপনির্বাচনের দাবিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) দফতরে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। আগামী বৃহস্পতিবার তৃণমূলের একটি প্রতিনিধিদল দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে করে উপনির্বাচনে দাবি জানাবে। আরও পড়ুন: এবার চলবে কি লোকাল ট্রেন? অনেক ছাড় দিয়ে রাজ্যে বাড়তে পারে আত্মশাসনের মেয়াদ

পশ্চিমবঙ্গে সাতটি বিধানসভা আসনে ভোট করতে হবে। তার মধ্যে ভবানীপুর আসন থেকে মমতার জিতে আসাটাই তৃণমূলের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বের। সাত দিনের প্রচারেই ভোট করা হোক বলে দাবি তৃণমূলের।

নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে বিজেপি-র শুভেন্দু অধিকারীর কাছে অল্প ব্যবধানে হারলেও দলের দুরন্ত ফলের পর ৫ মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি শপথ নেন। নিয়ম হল ৬ মাসের মধ্যে, মানে আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে সাংবিধানিক নিয়ম মেনে মুখ্যমন্ত্রী থাকতে হবে। এর মধ্যেই দিদিকে জেতাতে ভবানীপুর থেকে পদত্যাগ করেছেন এই কেন্দ্র বিজেপির রুদ্রনীল ঘোষকে হারিয়ে বিধায়ক হওয়া শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু বাধ সেধেছে করোনা। করোনার কারণে ভবানীপুর সহ রাজ্যের সাত বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন ও পুরভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা। তবে যত অনিশ্চয়তাই হোক, মমতাকে ৫ নভেম্ববরের মধ্যে কোনও বিধানসভা আসন থেকে জিততেই হবে। তাই রাজ্যের শাসক দলের উপনির্বাচন নিয়ে মরিয়া ভাব দেখা যাচ্ছে।

তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই বিষয়ে বলেন, "উপনির্বাচন করানো সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যেই পড়ে। বিরাট কোনও প্রচারে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। এখন মানুষ সব জানেন। এখন আর নতুন করে কী প্রচার হবে? ফলে ৭ দিন প্রচার হলে যথেষ্ট। সেখানে মানুষের কাছাকাছি যাওয়ারও কোনও প্রশ্ন নেই। যা হবে সমস্ত রকমের কোভিড বিধি মেনেই। তাই আমরা মিশনকে বলব আপনাদের সময়ও বেশি দিতে হবে না।"

ভবানীপুর ছাড়াও উপনির্বাচন হবে দিনহাটা, শান্তিপুর, খড়দহ, গোসাবা, জঙ্গিপুর ও সামসেরগঞ্জ আসনে। তার মধ্যে দিনহাটা ও শান্তিপুর আসনে ভোট হচ্ছে ওই দুই কেন্দ্রে বিজেপির জয়ী প্রার্থী পদত্যাগ করছেন বলে। দিনহাটা কেন্দ্র জিতে পদত্যাগ করেন নিশীথ প্রামাণিক। কারণ তিনি সাংসদ থেকে যান। শান্তিপুরেও জগন্নাথ সরকার একই কাজ করেন। তিনিও নিশীথ প্রামাণিকের মতই সাংসদ থেকেও বিধানসভা ভোটে লড়েছিলেন। পরে দলের নির্দেশে দুজনে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় উপনির্বাচন হবে। খড়দা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে জয়ী প্রার্থী কাজল সিনহা করোনায় প্রয়াত হওয়ায়। গত জুন মাসে গোসবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর প্রয়াত হওয়ায় সেখানে উপনির্বাচন হবে। অন্যদিকে, ভোট শুরুর আগে করোনায় প্রার্থীদের মৃত্যু হওয়ায় জঙ্গিপুর ও সামসেরগঞ্জে ভোটই হয়নি।