Ajoy Kumar Mukherjee (Photo Credits: Facebook)

কলকাতা, ৯ মার্চ: বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে রাজ্যে শাসন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার তৃণমূলকে পর্যদস্তু করতে সমানে সমানে টেক্কা দিতে ময়দানে বিজেপি। নির্বাচনের আগে দলবদলের খেলায় বেশ কিছুটা চাপের মুখে পড়েও ফের উঠে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে এমন টানটান পরিস্থিতি এই নতুন নয়। একটু যদি অতীতে ফিরে দেখা যায়, অর্থাৎ ১৯৬২ থেকে ১৯৭২ সাল তাহলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। দীর্ঘায়িত রাষ্ট্রপতি শাসন নাকি সীমিত সময়ের সরকার। এই দুইয়ের মধ্যেই রীতিমত হাবুডুবু খাচ্ছিল সেসময় রাজ্য। বিরোধী দল কিংবা শাসক দল হিসেবে কোনও রাজনৈতিক দলই সেভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি সেসময়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলা প্রথম বিধানসভা নির্বাচন দেখে ১৯৫২ সালে। ১৯৫২ খেরে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত বাংলা ছিল কংগ্রেসের দখলে। ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। তিন তিনবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেছেন অজয়কুমার মুখার্জি। আর এই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদে যখন কেউ ছিলেন না সেই সময় রাজ্যে জারি ছিল রাষ্ট্রপতি শাসন। ষষ্ঠ বিধানসভা (১৯৭১ সালের নির্বাচন) পর্যন্ত রাজ্যে নিজের ক্ষমতা দখল করে রেখেছিলেন অজয়কুমার মুখার্জি। ১৯৭২ সালে সপ্তম বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হন সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়। ১৯৭১ সালে সাধারণ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে ইন্দিরা গান্ধি দ্বিতীয় বারের মত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। একটানা ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইন্দিরা গান্ধি। ১৯৭১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে সাধারণ নির্বাচনের ছায়া পড়ে। ইন্দিরা গান্ধি শাসিত রাজ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ বিবাদ, দলের অন্দরে বিভক্ত হওয়া-সহ একাধিক ঘটনার সাক্ষী হয় বাংলা।

তিন তিনবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেছেন অজয়কুমার মুখার্জি। পঞ্চম বিধানসভা (১৯৬৭–৬৮) নির্বাচনে জিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন ১ মার্চ, ১৯৬৭ সালে। পঞ্চম বিধানসভা (১৯৬৯-৭০) নির্বাচনে জিতে ১৯৬৯ সালে আরও একবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন তিনি। ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ সাল থেকে ১৬ মার্চ, ১৯৭০ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীত্ব অবস্থায় তাঁর মোট সময়সীমা ছিল ১ বছর ১৯ দিন। ষষ্ঠ বিধানসভা (১৯৭১) নির্বাচনে জিতে ২ এপ্রিল, ১৯৭১ সালে ক্ষমতায় আসেন অজয়কুমার। তবে এবার মাত্র ৮৭ দিনের জন্য ক্ষমতায় থাকার পর ফের রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয় রাজ্যে।

১৯৭১ সালে ইন্দিরা গান্ধীর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে থাকায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল কংগ্রেস। সেসময় বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে কমিউনিস্ট পার্টি কংগ্রেসকে সমানে সমানে টেক্কা দেয়। পাশাপাশি অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লকের দখলে ছিল ৩টি আসন। এছাড়া ভারতীয় জন সংঘ দলটি, যারা সদ্য তৈরি হয়েছিল তারা মাত্র ১টি আসন দখল করতে পেরেছিল।

২০২১ নির্বাচন। তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি। একে অপরের বিরুদ্ধে কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়িতে ব্যস্ত নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য। অন্যদিকে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেছে কংগ্রেস। এবার ৮ দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যে। ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে নির্বাচন। ফলপ্রকাশ ২ মে।