অবশেষে বিচার পেলেন কুলতলির (Kultali) নাবালিকা ধর্ষণ কাণ্ডের মৃতার বাবা-মা। প্রায় ৬২ দিনের মাথায় দাঁড়িয়ে বিচার দিল বারুইপুর আদালত। অভিযুক্ত মুস্তাকিন সর্দারকে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত। সেই সঙ্গে বিচারক সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই ঘটনার পর অভিযুক্তের বিন্দুমাত্র অনুতাপ বা অনুশোচনা ছিল না। এমনকী ঘটনার পর বাড়িতে গিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছিল সে। বিচার চলাকালিনও অভিযুক্ত ছিল নির্বিকার। যা খুবই আশঙ্কার বিষয়। যদিও এদিন আদালতে তোলার সময় অভিযুক্ত মুস্তাকিন একাধিকবার বলে যে তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। জয়নগর পুলিশ তাঁকে ফাঁসাচ্ছে।
যদিও সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ মুস্তাকিনের বিপরীতে গিয়েছিল। এমনকী এই ঘটনায় ৩৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। যারমধ্যে দুজন অভিযুক্ত ও নির্যাতিতাকে একসঙ্গে দেখেওছিলেন। এছাড়া ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজেও ফ্রেম বাই ফ্রেম দুজনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। এমনকী অভিযুক্ত সাইকেলে করে কিশোরীকে নিয়ে গিয়েছিল তার প্রমাণও মেলে। আর সমস্ত কিছু মুস্তাকিনের বিপরীতে থাকায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সে। এই প্রসঙ্গে সরকার পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই ধরনের মানুষ বেঁচে থাকা সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক। আমি বিচার চলাকালীন দোষীর বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি চেয়েছিলাম। আদালত তা মেনে নিয়েছে। বিচারক তিনটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর টিউশন থেকে বাড়ি ফিরছিল জয়নগরের কুলতলির বাসিন্দা ওই নাবালিকা। মাঝে বাবার দোকান পড়েছিল, সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পর বাড়ির উদ্দেশ্যে যখন রওনা দেয়, তখন অভিযুক্ত মুস্তাকিন একটি দোকানে দাঁড়িয়েছিল। কিশোরীকে যেতে দেখেই সাইকেলে করে পিছু ধাওয়া করে। কিছুক্ষণ বাদে তাঁর সঙ্গে কথা বলে সাইকেলে তোলে অভিযুক্ত। মাঝে পরিচিত কেউ দেখতে পেলে প্রশ্ন করলে মুস্তাকিন জানায়, বাড়ির পাশেই থাকে তাই পৌঁছে দিচ্ছে। এরপর থেকে সারাদিন খুঁজে পাওয়া যায়নি নাবালিকাকে।
পুলিশে খবর দেওয়া হলে শুরু হয় তদন্ত। অবশেষে রাতের অন্ধকারের বাড়ির থেকে কিছুটা দূরে একটি জলাশয় থেকে উদ্ধার হয় তাঁর মৃতদেহ। দেহ উদ্ধারের কয়েকঘন্টা পরেই অভিযুক্তকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আর তারপরেই মাত্র ৬২দিনের মাথায় অভিযুক্ত মুস্তাকিন সর্দারকে ফাঁসির সাজা শোনাল বারুইপুর আদালত।