কলকাতা, ১৫ ডিসেম্বর: নাগরিকত্ব আইনের ( Citizenship Act) প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে উত্তপ্ত রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা। শনিবারের পর রবিবারও কোথাও রেল অবরোধ, কোথাও রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। বাধ্য হয়েই কড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। সংবাদসংস্থা পিটিআই (PTI) জানিয়েছে, রবিবার রাজ্যের ৬ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা (Internet service) বন্ধ করল রাজ্য সরকার। ২৪ ঘণ্টার খবর অনুযায়ী, রাজ্যের যে ৬ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বাতিল করা হল সেগুলি হল উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ও বসিরহাট মহকুমা। এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর ও ক্যানিং মহকুমাতেই বন্ধ হল ইন্টারনেট পরিষেবা। রাজ্য প্রশাসনের তরফে বারবার আবেদন জানানো হলেও কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত ও হাঙ্গামা বাধানোর চেষ্টা করছে। তাই আপাতত শান্তি ও সাধারণ মানুষের স্বার্থে বাতিল করা হল ইন্টারনেট পরিষেবা।
নাগরিকত্ব আইনের (Citizenship Act) প্রতিবাদে রবিবারও বিক্ষোভে তেতে উঠল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা। গতকাল দিন ভর বিক্ষোভের পর এ দিন সকাল হতেই বিক্ষোভ শুরু হয়। দফায় দফায় সড়ক ও রেল অবরোধ শুরু হয়। আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী, শনিবার দিনভর বিক্ষোভের পর এ দিন সকালেও তেতে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) খড়দা, আমডাঙা এবং দেগঙ্গা। আমডাঙায় ধানকল মোড় অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। সোনাডাঙা মোড়েও অবরোধ করা হয়। ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কে (National Highways) টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করলে যানজট সৃষ্টি হয়। টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করা হয় দেগঙ্গাতেও। ভ্যাবলায় ট্রেন অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। নলহাটি-আজিমগঞ্জ, আজিমগঞ্জ-নিউ ফরাক্কা এবং কৃষ্ণনগর-লালগোলা শাখায় এখনও ট্রেন পরিষেবা চালু হয়নি। হাওড়ায় কোনা এক্সপ্রেসওয়ের গরফা ব্রিজের কাছে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। সেখানে বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। রবিবার মহেশতলা থানার ডাকঘর থেকে ডাকঘরা জালখুরা পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা । নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ চলে বজবজ ট্যাঙ্করোড। আরও পড়ুন: Protest In Bengal Against Citizenship Act: নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রেল অবরোধ, বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পূর্ব রেলের দূরপাল্লার ট্রেন; ভোগান্তি যাত্রীদের
বিক্ষোভের কারণে বিভিন্ন বিভাগে রেল চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষই অসুবিধা ভোগ করছে। এমনকি নিরাপত্তা সংক্রান্ত রেলের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার কারণে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষ অসুবিধা ভোগ করছেন। ফলে সাধারণ মনুষের কাছে আবেদন রেল চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করুন। আজ সকাল থেকে বিক্ষোভের জেরে পূর্ব রেলের বিভিন্ন শাখায় আটকে রয়েছে বহু লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেন। এক বিজ্ঞপ্তিততে পূর্ব রেল জানিয়েছে, নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলের কাটিহার ডিভিশনের ভালুকা স্টেশনে ট্রেন আটকে দেওয়া হয় সাড়ে ১০টা থেকে। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে অবরোধ করে স্থানীয়রা। মালদা টাউনের কুমেদপুর স্টেশনেও রেল অবরোধ করা হয়েছে সকাল ১০টা ৫০ থেকে। যার কারণে হাওড়া মুখি বহু ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়েছে। বারসোই স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে হলদিবাড়ি-কলকাতা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। খুরিলাল স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ডাউন আগরতলা-শিয়ালদা কাঞ্জনজঞ্ঘা এক্সপ্রেস। অন্যদিকে সুদানি স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ডাউন গুয়াহাটি-সেকেন্দ্রাবাদ স্পেশাল।