কলকাতা, ২৮ মে: সন্ধ্যার কালবৈশাখীর পর রাতভর চলল বৃষ্টি। বৃহস্পতিবারের সকালে দেখে মনে হতে পারে জৈষ্ঠ নয়, আষাঢ় চলছে। সকাল সকাল ছটা থেকে সাতটা নাগাদ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির পর বেগ কিছুটা কমলেও মেঘের গুরুগর্জন চলছেই। এদিকে আম্ফান ঘূর্ণিঝড়ের রেশ এখনও কাটেনি। তারমধ্যে সেই বুধবারেই কালবৈশাখীর দাপটে ত্রস্ত বাংলা (West Bengal)। দক্ষিণবঙ্গ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। হুগলির আরামবাগে গাছ পড়ে মারা গিয়েছেন লালমোহন রায়গুপ্ত(৪০)। এই ঘটনায় ২ জন আহতও হয়েছেন। অন্যদিকে দুর্গাপুরের মাধাইপুরে বাজপড়ে মৃত্যু হয়েছে বছর ৪০-এর গোপাল যাদবের। বুধবার রাতে কলকাতায় কালবৈশাখীর গতিবেগ ছিল ৯৬ কিলোমিটার। খুব বেশি সময় সেই ঝড় স্থায়ী না হলেও ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন রেখে গেছে।
এদিনের ঝড়ে কলকাতার রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, শরৎ বসু রোড এবং লেক রোডের সংযোগস্থল, বেলেঘাটা মেন রোড, চাউল পট্টি রোড, নারকেলডাঙা মেন রোড, রাজা বসন্ত রায় রোড-সহ কয়েকটি জায়গায় ফের গাছ ভেঙেছে। কাশীপুর রোড এবং চিৎপুর লকগেট উড়ালপুলের সংযোগস্থলে বাতিস্তম্ভ ভেঙে পড়ে। বাসন্তী হাইওয়েতেও গাছ পড়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় ঝড় হয় প্রায় ৪০ মিনিট। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, বিহার থেকে উত্তর-পূর্ব ভারত পর্যন্ত নিম্নচাপ অক্ষরেখা ছিল। সেটি দক্ষিণবঙ্গের দিকে সরেছে। অক্ষরেখার টানে জলীয় বাষ্প ঢুকেছে এবং বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি করেছে। আবহবিজ্ঞানীরা জানান, এ দিন গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরে সার দিয়ে মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। গণেশবাবু বলেন, ‘‘আগামী কয়েক দিন এমন পরিস্থিতি চলতে পারে।’’ রাতে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় ঝড়ের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। আরও পড়ুন- Weather Update: কালবৈশাখীর দাপটে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টি
আম্ফান চলে যাওয়ার পর থেকেই নতুন ঘূর্ণিঝড়ের গুজব ছড়ায়। আবহবিদরা আশ্বস্ত করে বলেন, অন্তত ৪ জুন পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। ক’দিন ধরে দমকা বাতাস বইছে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। তা নিয়েও আবহবিদরা বলেছিলেন, দমকা বাতাস বর্ষার ইঙ্গিত, ঘূর্ণিঝড়ের নয়। এরই মধ্যে উম্পুনের ঠিক এক সপ্তাহ পরই, বুধবার বিকেলে বিভিন্ন তল্লাটে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর নতুন করে আতঙ্ক ছড়ায়। ‘স্কোয়াল লাইন’ অর্থাৎ ‘মেঘ-মালা’ তৈরি হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গের সিংহভাগ জেলাতেই বৃষ্টিবাদলা হয়েছে। তবে কালবৈশাখী যে স্বল্পসময়ের ঝড়, আম্ফানের প্রায় দিনভর তাণ্ডবের তুলনায় নেহাতই শিশু, তা দ্রুত টের পেয়েছে আমজনতা।