কলকাতা, ২৩ ডিসেম্বর: আচার্য হিসেবে নিজের গুরুত্ব বোঝাতেই সম্ভবত সোমবার বিনা নিমন্ত্রণে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) হাজির হয়ে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। আর তার জেরে রাজ্যপালকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা। রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটে পৌঁছোতেই তাঁকে আটকে রেখে চলে গো-ব্যাক স্লোগান। ওড়ান হয় কালো পতাকা। এমনকি এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত রাজ্যপালকে নিজের গাড়ি থেকে নামতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তিনি আটকে আছেন গাড়ির ভিতরেই।
ছাত্ররা (Students) এদিন বিদ্রুপভিত্তিক মন্তব্য করে রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে বলেন, "সঙ্ঘের দালালকে মেনে নেব না।" এছাড়াও তাঁদের বক্তব্য, তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি হলে তাঁকে উত্তর দিতে হবে নাগরিক আইন সংক্রান্ত কয়েকটি প্রশ্নের। এদিকে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে চান। এই সময়ের খবর অনুযায়ী, সমাবর্তন বাতিলের ক্ষমতা কার হাতে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে গতকাল রবিবারই উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে চিঠি দিয়েছিলেন ধনখড়। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধির উল্লেখ করে তিনি দাবি করেছেন, বিশেষ সমাবর্তন বাতিলের যে সিদ্ধান্ত কর্মসমিতি নিয়েছে, তা তাদের এক্তিয়ার বহির্ভূত। সেইসঙ্গে ধনখড়ের জোরালো হুঁশিয়ারি, এই অসম্মান সংশ্লিষ্টদের জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এমনকী, এই সমাবর্তনকে 'বেআইনি' বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রাজ্যপালের চিঠিতে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বেআইনি সমাবর্তনে শংসাপত্র নিয়ে বিপাকে পড়তে পারেন পড়ুয়ারাও। আগেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে পড়ুয়াদের ঘোষণা। তাঁদের একাংশ জানিয়েছিল, সোমবার আচার্য এলে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাবেন। সেইমত আচার্যকে গেটেই ছাত্রছাত্রীদের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হল। তবে উপাচার্য জানিয়েছিলেন, তিনি আশা করেন ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদে কোনও আপত্তিকর পরিস্থিতি ক্যাম্পাসে তৈরি হবে না। তিনি কখনওই ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকার পক্ষপাতী নই। এবারও তিনি ডাকবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। আরও পড়ুন: JP Nadda: কলকাতায় পৌঁছলেন জে পি নাড্ডা, শুরু নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তৃণমূলের পাল্টা বিজেপির মহামিছিল
West Bengal Governor Jagdeep Dhankhar is still inside his car. He has not been able to get out as the protest by students is still underway. https://t.co/uSSlaMCg3X
— ANI (@ANI) December 23, 2019
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মে আচার্যের ক্ষমতা খর্ব করে সম্প্রতি নতুন বিধি কার্যকর করেছে রাজ্য সরকার। আগের বিধি মেনে সমাবর্তনে (Convocation) আচার্য হিসেবে রাজ্যপাল ধনখড়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু বাধ সাধে ছাত্রদের সিদ্ধান্ত। একাধিক ছাত্র সংগঠন জানিয়ে দেয়, তারা ধনখড়কে বয়কট করবে। সূত্রের খবর, বিশেষ সমাবর্তনে যে বিশিষ্টদের ডিএসসি, ডিলিট দেওয়ার কথা ছিল, তাঁদেরও কেউ কেউ ধনখড়ের হাত থেকে সম্মান নেওয়ায় আপত্তি জানিয়েছিলেন। ফলে আচার্যকে বাদ দিয়েই সমাবর্তন হওয়ার কথা। স্থগিত রাখা হয়েছে বিশেষ সমাবর্তনের পর্বটিও। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তেই বেজায় চটেছেন ধনখড়। কারণ, তাঁরই পৌরোহিত্যে হওয়া বিগত কোর্ট বৈঠকে ডিলিট-ডিসএসসি প্রাপকদের নাম চূড়ান্ত হয়েছিল।