Hoogly Ghoshal Der Durga Pujo Photo Credit: Youtube@Folklore

হুগলি জেলার প্রাচীন পুজো গুলোর মধ্যে অন্যতম কোন্নগরের ঘোষাল বাড়ির পুজো।৫৬৯ বছরের ঘোষালদের পুজোর মূল আকর্ষনই হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর সবাই মিলে হই হই করে পংক্তি ভোজ। এক সময় বরে গুলাম আলি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়রা ঘোষাল বাড়িতে গান গেয়ে গেছেন।করোনার কারণে দু তিনবছর সেই অনুষ্ঠান কাটছাঁট করা হয়েছিল।এবার আবার সেই অপেক্ষায় ঘোষাল বাড়ির সদস্যরা। দেশ বিদেশে ঘোষালদের আত্মীয় যারা থাকেন তাঁরা সকলেই চলে আসেন পুজোয়।

শোনা যায় সম্রাট আকবরের কাছ থেকে সনদ পেয়ে পেয়ে আশুতোষ ঘোষাল কোন্নগর অঞ্চলে জমিদারি পত্তন করেন।সে সময় থেকে দুর্গা পুজো শুরু হয়।সেসময় বারোয়ারী পুজোর প্রচলন ছিল না তাই বাড়ির পুজোকেই বারোয়ারীর রূপ দিতে ব্রিটিশ সরকার সারে সাতশ টাকা অনুদান ধার্য করেছিলো ঘোষালদের পুজোর জন্য।দীর্ঘ দিন সেই টাকা পেয়ে এসেছে ঘোষালরা।সেই টাকা ঘোড়ার গাড়ি করে ট্রেজারি থেকে নিয়ে আসা হত।পাড়া শুদ্ধ সবাইকে খাইয়ে পুজো খরচ করেও টাকা বেঁচে যেত সেই সময়।এখন সারে সাতশ টাকার মূল্য কমেছে।তাই বিগত কয়েক বছর ধরে সেই টাকা আর নিয়ে আসে না ঘোষালরা।

পরিবার বড় হয়েছে,অনেকেই বাইরে থাকেন, তবু পরিবারের সবার সঙ্গে মিলিত হতে হাজির হন পুজোর সময়।ঐতিহ্য আর পরম্পরার টানে।

ঘোষাল বাড়িতে নরসিংহ মূর্তি পুজো হয়।ঘোষালদের দালানে ঠাকুর তৈরী করেন মৃৎশিল্পী।চারদিনের পুজো শেষে দশমীর দিন সকালে হয় বরন।ঘোষালদের বাড়ির এয়ো স্ত্রীদের দশমীর দিন বরন করার রীতি আজো রয়েছে।আলতা সিঁদুর পরে পান্তার সাথে ইলিশ খেয়ে বরন করে স্বামীর মঙ্গল কামনায়।ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করে এয়ো তার আমিষ খাওয়াটা যেন বন্ধ না হয়।এর পিছনেও রয়েছে ইতিহাস।একসময় স্থানীয় বাগখালে ঘন জঙ্গল ছিল।সেখানে বাঘ থাকত।তা থেকেই ওই জায়গার নাম হয় বাগ খাল।বাগখালে জোরা নৌকায় চাপিয়ে মাঝ গঙ্গায় নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দেওয়া হত প্রতিমা।রাতে সেই বিসর্জন দেওয়ার সময় একজনকে বাঘে টেনে নিয়ে যায়।তারপর থেকে দিনের আলোয় বিসর্জন দেওয়া হয়।